সরকারি হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্ম সংকটে রোগীর ভোগান্তি
বুকে ব্যথার কারণে গত রোববার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন মো. আতিকুল ইসলাম। চিকিৎসক এক্স-রে করিয়ে আবার যেতে বলেন। হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগে গেলে বলা হয়, এখানে হবে না, হৃদরোগ থেকে করিয়ে আনেন। কিন্তু হৃদরোগ হাসপাতালে গেলে তাঁকে জানানো হয়, সেখানও বাইরের রোগী ও বহির্বিভাগের রোগীর এক্স-রে করা হচ্ছে না। ফিল্ম না থাকায় হচ্ছে না সিটি স্ক্যান ও এমআরআই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক হাসপাতালে এক্স-রে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। সীমিত পরিসরে চলছে এমআরআই ও সিটি স্ক্যান সেবা। চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে দ্বিগুণ, তিন গুণ ব্যয়ে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। এতে হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেওয়া বিপুলসংখ্যক রোগী বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট, এলসি জটিলতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ফিল্মের দাম বাড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সংকট সারা দেশে
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে এক্স-রে সেবা বন্ধ রয়েছে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল), জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি রোগী ছাড়া এক্স-রে সুবিধা পাচ্ছে না। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে নির্দিষ্টসংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে সেবা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার বাইরে রাজশাহী, বগুড়া, বরিশাল মেডিকেল কলেজে এক্স-রে ফিল্মের সংকট রয়েছে।
তবে রংপুর ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে সংকট নেই বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমার্জিং বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, গত প্রায় এক সপ্তাহ এক্স-রে ফিল্মের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁরা শুধু ভর্তি রোগীদের এক্স-রে করছেন। বহির্বিভাগের রোগীদের বাইরে থেকে এক্স-রে করিয়ে আনতে বলা হয়েছে।
সংকটের কারণ জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বড় ফিল্মের কিছুটা সংকট রয়েছে। এত দিন ধার করে চালাতে হয়েছে। তবে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, আশা করছি দ্রুত ফিল্ম চলে আসবে। তখন সমস্যা হবে না।’