নিজের সম্মান যখন ধূলিসাৎ করা হয়

www.ajkerpatrika.com জাহীদ রেজা নূর প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:৫৪

সম্মান করার অর্থ হলো, সত্যিই ব্যক্তির ভেতরে এমন কোনো গুণ থাকতে হবে, যে গুণগুলোর সর্বজনীন ব্যাপ্তি আছে। ব্যক্তিটিকে আস্থায় নেওয়া যায়। মনে করা যায়, ব্যক্তিটি তাঁর কথায়, কাজে যে সংস্কৃতিবোধের পরিচয় দিচ্ছেন, সেটা বানানো নয় এবং সেটা শুধু ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।


এই তো বছর দুয়েক আগে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার সময় একটি নাম আলোচনায় এসেছিল। এস এম রইজ উদ্দিন আহাম্মদ নামে একজন সাহিত্যিক ২০২০ সালে ঘোষিত স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়ে গেলেন। যাঁরা কোনো না কোনোভাবে আমাদের সাহিত্যজগৎ নিয়ে কিঞ্চিৎ ধারণা রাখেন, তাঁরা এ নামটি আগে কখনো শোনেননি। তাঁর লেখা কোনো বই কারও নজরে পড়েছে কি না, সেটাও আমাদের জানা নেই। তারপর একসময় অনেকেই ভাবলাম, হয়তো আমাদের পড়াশোনায় ঘাটতি আছে। আমাদের অজান্তেই একজন অসাধারণ সাহিত্যিককে খুঁজে বের করেছে কমিটি।


এরপর যা হলো, তা নিয়ে কথা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। স্বয়ং বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান যখন বললেন, ‘এবার সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার পেলেন রইজ উদ্দিন, ইনি কে? চিনি না তো। কালীপদ দাসই বা কে? হায়! স্বাধীনতা পুরস্কার!’


তখন টনক নড়ল অনেকের। সমালোচনার মুখে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই পুরস্কার বাদ দেওয়া হয়।


গত বছরের আরও একটি ঘটনা আলোড়ন তুলেছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নবীরুল ইসলাম বুলবুলের ২৯টি বই ছিল সরকারি ক্রয় তালিকায়। সরকারি কর্মকর্তাদের জ্ঞানচর্চা ও পাঠাভ্যাস বাড়াতে, পাঠাগার গড়তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যে তালিকা করেছিল, তা নিয়েই উঠেছিল বিতর্ক। নবীরুল ইসলামের বইগুলো কী করে সরকারি কর্মকর্তাদের জ্ঞানচর্চায় অবদান রাখত, সে আলোচনা এখানে নয়। আলোচনার বিষয় হলো, এই যে যেনতেনভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নিজের ২৯টি বই তালিকায় গছিয়ে দেওয়ার প্রবণতা—এ থেকে আমরা বের 
হব কী করে?


ভিন্নধর্মী আরেকটি চমকপ্রদ ঘটনার উল্লেখ করলে মন্দ হয় না। ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তৃতা দিচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তাঁর বক্তৃতাকালেই মঞ্চটা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। মঞ্চে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত লোকজন ওঠায় মঞ্চ তা সহ্য করতে পারেনি, ভেঙে পড়েছে।


দুই
ওপরের দুটো ঘটনার সঙ্গে শেষ ঘটনাটিকে এক করেছে ওই একটি ব্যাপারই—নিজেদের সম্মান না করার প্রবণতা। ওপরের তিনটি ঘটনাতেই দেখা যাচ্ছে, নিজেকে জাহির করার একটা ব্যাপার রয়েছে। ছাত্রলীগের মঞ্চটি যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, কারণে-অকারণে অসংখ্য নেতা-কর্মীর সমাগম হয়েছিল মঞ্চে। মঞ্চের সামনে বসে বা দাঁড়িয়ে নেতাদের ভাষণ শোনার দিকে মন দেননি এই ‘বাড়তি’ নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ভেবেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি থাকলে আখেরে এগোতে পারবেন অনেকটা পথ। তাই মঞ্চের সামনে না থেকে নেতার পাশে বা পেছনে থাকাটাকেই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করেছেন তাঁরা। (যেন টেলিভিশন ক্যামেরায় দেখা যায়, অথবা স্টিল ফটোগ্রাফে তিনি থাকেন)। ফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। ভেঙে পড়েছে মঞ্চ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও