কৃষিঋণ ব্যবস্থায় ঋণখেলাপি কৃষকের মুখ

দেশ রূপান্তর নিতাই চন্দ্র রায় প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:৪২

বাংলাদেশে বড় কৃষকের সংখ্যা মোট কৃষকের শতকরা ২ ভাগ, মাঝারি ১৮ ভাগ এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের সংখ্যা শতকরা ৮০ ভাগ। এই ৮০ ভাগ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকই কৃষির মূল চালিকাশক্তি। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ইফপ্রি) বলছে এনজিও, আত্মীয়স্বজন, বেসরকারি ব্যাংক ও দাদন ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন বেসরকারি উৎস থেকে কৃষকরা ৮১ শতাংশের বেশি ঋণগ্রহণ করেন। এই সব ঋণের সুদ ১৯ থেকে ৬৩ শতাংশ। আর সরকারের কৃষি ব্যাংক ৯ শতাংশ সুদে যে কৃষিঋণ দেয়, তার পরিমাণ মাত্র ৬ শতাংশ। এ থেকেই বোঝা যায় সিংহভাগ কৃষক সরকারি বিশেষায়িত ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ফসল চাষের জন্য প্রয়োজনীয় কৃষিঋণ পান না।


এসব কারণে ব্যাংকের শাখাগুলোতে চালু করতে হবে কৃষিঋণ বুথ। এনজিওর মাধ্যমে ঋণ বিতরণ কমাতে হবে। চলমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। এমন কর্মসূচির সাফল্যের উদাহরণ রয়েছে চিনিকলে। সেখানে কৃষকদের মধ্যে উপকরণ ও নগদ টাকা হিসেবে যে ঋণ বিতরণ করা হয়, তা আখ উন্নয়ন কর্মীরা (সিডিএ) কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেন। সিডিএরা শুধু ঋণই দেন না। কৃষককে আখ চাষের আধুনিক প্রযুক্তি হাতেকলমে শিখিয়ে দেন। আখ বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র (পুর্জি) প্রদানের ক্ষেত্রেও মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ফলে প্রতিটি চিনিকলেই এখন শতভাগ কৃষিঋণ আদায় হয়।


কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ বেসরকারি ব্যাংক সরাসরি কৃষিঋণ বিতরণ করে না বরং বিতরণের জন্য বেসরকারি সংস্থাকে নিয়োগ করে। এনজিওর মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের সুদ ২৪ শতাংশ পর্যন্ত। আর ব্যাংকগুলো বিতরণ করছে ৮ শতাংশ সুদে। বর্তমানে বেসরকারি ব্যাংকগুলো তাদের কৃষিঋণের ৭০ শতাংশ বিতরণ করে এনজিওর মাধ্যমে।


প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক এক বৈঠকে বলা হয়, যত দ্রত সম্ভব এনজিওগুলোর ঋণ বিতরণের হার ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। কারণ, যখনই এনজিওগুলো ঋণ বিতরণ করে, তখই সুদের হার বেড়ে যায়। এনজিওগুলোর সুদের হার কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয় বৈঠকে। দেশের সব ব্যাংক শাখায় একটি কৃষিঋণ বুথ খুলতে বলা হয়; যাতে কৃষক বুঝতে পারেন কোথায় যেতে হবে ঋণের জন্য। সভায় অংশ নেওয়া ব্যাংকগুলোকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষিঋণ মেলার আয়োজন করতে বলা হয়েছে, যেখানে ব্যাংকার ও কৃষকরা অংশ নেবেন। কারণ, কৃষকরা মাঠে ব্যস্ত থাকেন এবং ব্যাংকে যাওয়ার জন্য তাদের সময় কম। মেলায় অংশ নেওয়া ব্যাংকগুলো কৃষকদের মধ্যে তাৎক্ষণিক আবেদনপত্র বিতরণ ও গ্রহণ এবং ঋণ অনুমোদন করবে। এছাড়াও ওই সভায় কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগকে প্রতিটি উপজেলার কৃষকদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। যাদের ঋণ প্রয়োজন, উপজেলা খামার-ঋণ কমিটি তাদের তালিকা তৈরি করে ব্যাংকগুলোকে দেবে। এরপর ব্যাংক কর্মকর্তারা কৃষকের বাড়ি গিয়ে ঋণ বিতরণ করবেন। কৃষিঋণ ব্যবস্থার পরিবর্তন আনার জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের জন্য যেসব প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে সেখানে ব্যাংকারদের আমন্ত্রণ জানাতেও বলা হয়। যাতে ব্যাংকাররা সেখানে বসে ঋণের আবেদনপত্র বিতরণ এবং ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও