ঘাড়ের ব্যথায় করণীয়
ঘাড়ে ব্যথা নানা কারণে হতে পারে। অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের ব্যথা হয় প্রধানত আঘাতের (মাকুলোস্কেলিটাল) কারণে। যেমন দুর্ঘটনায় ঘাড়ে আঘাত বা অস্বাভাবিক দেহভঙ্গির জন্য টান লাগা কিংবা ভারী জিনিস তুলতে গিয়ে টান পড়া। ছোটরাও ঘাড়ব্যথায় আক্রান্ত হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুরা এতে আক্রান্ত হয় ভারী স্কুলব্যাগ বহনের কারণে।
তবে ঘাড়ে ব্যথা চল্লিশোর্ধ্ব বয়সীদের বেশি হয়ে থাকে। এ বয়স থেকে প্রথমে মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয় শুরু হয়। পরে ক্যালসিয়াম জমে কাঁটার মতো হাড় বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সমস্যার নাম স্পন্ডাইলোসিস। ফলে নার্ভের চলার পথে চাপ পড়ে। নার্ভের রক্ত সঞ্চালন কমে যায়। স্নায়ুরজ্জুতেও প্রচণ্ড চাপ পড়ে। ফলে স্নায়ুরজ্জুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ চাপের কারণে রোগী কেবল ঘাড়ব্যথায় ভোগেন তা নয়, ব্যথা ক্রমে হাতে ছড়িয়ে যায়। হাত ও বাহু ঝিনঝিন করে। অনেক সময় হাত অবশ হয়ে আসে।
রোগ অনেক পুরোনো ও জটিল হয়ে গেলে রোগীর হাত-পা প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে। প্রস্রাব-পায়খানা আটকে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
রোগী অনেক সময় প্রস্রাব-পায়খানা ধরে রাখতেও সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। যৌনমিলনে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়া ঘাড়ব্যথার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো সার্ভাইক্যাল ডিস্ক প্রলাপ্স, মেরুদণ্ডের টিবি, স্পাইনাল ফ্রাকচার ইত্যাদি।
দরকার সচেতনতা
- সমস্যা হওয়ার আগে সচেতন হওয়া শ্রেয়। তাই ঘাড়ের যত্ন নিতে হবে। অনেকে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন। এটি মোটেও ভালো অভ্যাস নয়। গাড়িতে ভ্রমণকালে ঘুম এলে অবশ্যই ঘাড়ে সার্ভাইক্যাল কলার পরে থাকতে হবে।
- বাড়িতে নিচু বালিশ ও শক্ত বিছানায় ঘুমাতে হবে। উপুড় হয়ে ঘুমানো মোটেও উচিত নয়।
- ঘাড়ে ভারী জিনিস নেওয়া যাবে না। হাতে খুব ভারী বস্তু তোলা ঠিক নয়।
- নিয়মিত ঘাড়ের ব্যয়াম করতে হবে।
- ঘাড়ব্যথা হলে, বিশেষ করে হাত বা বাহুতেও ব্যথা, অস্বাভাবিক অনুভূতি ছড়িয়ে পড়লে ঘাড়ের এক্স-রে ও এমআরআই করে রোগ নির্ণয় করতে হবে।
- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- ঘাড়ে ব্যথা