পাকিস্তানিদের পরাজয় নির্ধারণ করে দেয় যে হামলা
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হাউসে (বর্তমান বঙ্গভবন) হামলা চালায় ভারতীয় মিত্রবাহিনী। চারটি মিগ-২১ যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালানো হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিডি বকশি তাঁর ‘৭১ ড্যাশ টু ঢাকা’ বইয়ে এই হামলার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। কীভাবে একটি গোপন সংকেত উন্মোচনের মাধ্যমে ১৪ ডিসেম্বর গভর্নর হাউসে হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল, কীভাবে বিমান উড়ে গিয়ে হামলা করেছিল, কীভাবে এই হামলা পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন—বইয়ের ‘মূলে আঘাত: গভর্নর হাউসে হামলার আদ্যোপান্ত’ শীর্ষক অধ্যায়ে প্রাণবন্ত বর্ণনায় ছবির মতো উঠে এসেছে সবকিছু। ওই হামলায় পাকিস্তানি বাহিনীর মনোবল পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল।
গোপন সংকেত উদ্ধারের কাজে নিয়োজিত কর্মী উত্তেজিত হয়ে চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে উঠলেন। ভারতীয়রা পাকিস্তানের গোপন সংকেত উদ্ধার করেছে। ১৭তম ওয়্যারলেস এক্সপেরিমেন্টাল ইউনিটের হাবিলদার বিপিন ত্রিবেদির হাতে এখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হাউসের সেই সংকেত। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় গভর্নর হাউসে জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছে গভর্নর আবদুল মোতালেব মালিক এই গোপন সংকেত পাঠিয়েছেন। বৈঠকে আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন—পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজি, মেজর জেনারেল ফরমান আলী, গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা এবং নিয়াজির নেতৃত্বাধীন কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। মূলত ঢাকায় সেদিন গভর্নর হাউসে পাকিস্তানের পুরো মূল নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র বা কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোলের (সিঅ্যান্ডসি) কর্মকর্তাদের এক ছাদের নিচে মিলিত হওয়ার কথা।