নিরাপদে থাকুক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
প্রাথমিক পদক্ষেপ
♦ প্রথমত ফেসবুকে একটি প্রাইমারি ই-মেইল অ্যাড্রেস থাকতে হবে এবং ই-মেইলের অ্যাকসেসও থাকতে হবে। সেটিং থেকে জেনারেল অ্যাকাউন্ট সেটিংয়ের নিচে কন্টাক্ট প্রাইমারি লেখার পাশে এই ই-মেইল ঠিকানা দিতে হয়। এখানে একাধিক ই-মেইল ঠিকানা দেওয়া যায়। এই ই-মেইলের পাসওয়ার্ড মনে থাকা চাই। ই-মেইল ঠিকানা থাকলে ফেসবুক হ্যাক হলে ওই ঠিকানায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মেইল করে জানায়। হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্টটি আপনার ওই মেইলের লিংকে গিয়ে জানাতে হয়। সপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণাদি দিলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্ট ফেরত দিয়ে দেয়।
♦ ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে দুই ধাপের ভেরিফিকেশন চালু রাখতে হবে। এটা করা থাকলে অন্য কেউ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ঢুকতে গেলে ফেসবুক মেসেজে কোড পাঠাবে। অথবা সরাসরি কল করে কোড জানাবে। ফলে তখনই জেনে যাচ্ছেন দুষ্কৃতকারীদের তৎপরতার খবর।
♦ ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নাম এবং জন্মতারিখ মনে রাখতে হবে এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গেও মিল রাখতে হবে। এই তথ্যগুলো হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্ট উদ্ধারে কাজে লাগে।
♦ কোনো লিংকে বা থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনে ফেসবুকের নম্বর এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করা যাবে না। এতে আইডি হ্যাক সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। ইনবক্সে লোভনীয় খুদে বার্তা এলো। সুখবর জানিয়ে কেউ লিংক পাঠাল। ভুলেও তাতে প্রবেশ করা যাবে না। সম্ভব হলে যে মেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে ফেসবুক খুলবেন, সেটা অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।
♦ তিন থেকে পাঁচ বন্ধুকে সিকিউরিটি অপশনে সংযুক্ত করতে পারেন। যেন কখনো অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে সহজে পুনরুদ্ধার করা যায়। নির্বাচিত বিশ্বস্ত বন্ধুর সহায়তা নিয়ে অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
♦ অপরিচিত কাউকে ফেসবুকে বন্ধু না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ—এমনটাই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের পরামর্শ। ইনবক্সে অনেক মুখরোচক খুদে বার্তা আসতে পারে। এসব এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। বন্ধু ছাড়া কেউ বার্তা দিতে পারবে না—এ অপশনটি চালু রাখতে পারেন।
♦ সন্দেহজনক লিংককে না বলুন। কেউ লিংক পাঠাল। হুট করে তাতে ক্লিক না করে যাচাই করে নিন। যিনি লিংক পাঠিয়েছেন, তাঁকে আলাদাভাবে নক দিয়ে জেনে নিতে পারেন। আদৌ সেটা তিনি পাঠিয়েছেন কি না? কারণ হ্যাকার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেও সেই অ্যাকাউন্ট থেকে লিংক পাঠাতে পারে।
♦ ফেসবুকে লগইনে ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড টাইপ করবেন। তবে কখনো ‘কিপ মি লগড ইন’ বক্স চেক করবেন না। এটা করলে আপনার অ্যাকাউন্ট বেহাত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। শুধু নিজের ব্যক্তিগত কম্পিউটারেই ‘কিপ মি লগড ইন’ করা যেতে পারে।
চাই শক্তিশালী পাসওয়ার্ড
শক্তিশালী করতে গিয়ে এমন পাসওয়ার্ড দিলেন, যা নিজেই একসময় ভুলে গেলেন। মহামুশকিল, তাই না? ফেসবুকে যে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন তা অন্যত্র ব্যবহার না করাই উত্তম। এক পাসওয়ার্ড সব জায়গায় ব্যবহার বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ। এবার মনে প্রশ্ন আসতে পারে—কেমন পাসওয়ার্ড নিরাপদ হতে পারে? বর্ণ বা সংখ্যার কম্বিনেশন দিয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করা এবং ছোট বা বড় হাতের বর্ণ ব্যবহার করা, প্রতীকী চিহ্ন (#,*,? ইত্যাদি) এবং নন-ডিকশনারি শব্দ ব্যবহার করা। কমপক্ষে আট থেকে ১২ ডিজিট দিয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করা এবং মাঝে মাঝে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা। কমন কিছু, যেমন—আপনার জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ডাকনাম, স্ত্রীর নাম, বিবাহবার্ষিকী, ছেলেমেয়ের নাম—এসব দেওয়া অনুচিত। যখনই ফেসবুক থেকে চলে যাবেন, লগআউট করতে ভুলবেন না একেবারে।