তিন স্তরে মজুতে অস্থির চালের বাজার
দুর্ভিক্ষের আতঙ্কে ভরা মৌসুমে চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ী, কৃষক এবং ভোক্তা পর্যায়ে আপৎকালীন মজুতের প্রভাবে বাজারে চালের দাম বাড়ছে। গত এক মাসে মোটা চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে। একই সময়ের ব্যবধানে আটার দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মনিটরিং টিম। খাদ্য মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চালের দাম কমার চেয়ে বৃদ্ধির কারণ কী তা খতিয়ে দেখতে বলেছে। কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে কি না তা দেখতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী সপ্তাহে দেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪৯ মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন গম মজুত রয়েছে। চাল ও গমের মোট মজুত ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৯০২ মেট্রিক টন। এ মজুত থেকে আপৎকালীন যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকার রেশনিং করবে। তাছাড়া সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি, ওএমএস, বিভিন্ন সংস্থার রেশনিংও এই মজুত থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত বোরো ও চলতি আমন মৌসুমে উৎপাদন যথেষ্ট হয়েছে। আমনের ফলন তো ধারণার চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। বাজারে চাল ভরপুর। তারপরও দাম বাড়ছে কেন? এর পেছনে রহস্য আছে। তারা আরও জানান, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে। আবার সরকার আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদেশ থেকে চাল ও গম আমদানি করছে। তারপরও দাম বাড়ে কেন? চলতি বছর বিদেশ থেকে সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৪০২ মেট্রিক টন। গম আমদানি হয়েছে ৪ লাখ ২২ হাজার ৮৮৬ মেট্রিক টন। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে চাল আমদানি হয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন। আর গম আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। চলতি মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত চাল আমদানির অনুমতি রয়েছে। সুতরাং বাজার কারা নিয়ন্ত্রণ করছে তা অনুসন্ধান করা জরুরি বলে তারা মন্তব্য করেন।