অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা দুটোই আছে

কালের কণ্ঠ ড. আতিউর রহমান প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩:৫৩

সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে যাঁরা ভাবেন, বলতে গেলে এ বছরের শুরু থেকেই তাঁরা বলে আসছেন যে চলমান বৈশ্বিক সংকটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ধারণাতীত গতিতে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়া। মূল্যস্ফীতি ও মন্দা সারা বিশ্বের মানুষের বাঁচার লড়াইকে আরো চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। অর্থনীতির এই অবনতির ধারা আরো কত সময় ধরে এবং কেমন তীব্রতার সঙ্গে চলমান থাকবে—তা বলাও মুশকিল। আইএমএফ গত অক্টোবর মাসে প্রকাশিত তাদের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকেও এমনটি বলেছে।


বিশ্বব্যাংক, এডিবিও একই ধারায় মত দিচ্ছে। বাংলাদেশও এই সংকটের প্রভাব বলয়ের বাইরে নয়। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং রেটিং এজেন্সিগুলো তাই আগে যেমনটি প্রাক্কলন করেছিল, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি তেমন হবে না বলে জানাচ্ছে। সর্বশেষ ২৯ নভেম্বরের খবরে জানা গেল মার্কিন রেটিং এজেন্সি ফিচ সলিউশনসও বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আগে যেমনটি প্রাক্কলন করা হয়েছিল তার চেয়ে কম হবে। তাদের প্রতিবেদন মতে, এর আগে ২০২১-২২-এ বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭.২ শতাংশ। আর চলতি ২০২২-২৩ বছরে এই হার ৭.৫ শতাংশ হবে বলে বাজেটে ধারণা করা হয়েছিল। করোনাজনিত স্থবিরতা কাটিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য-উৎপাদন আবার গতিশীল হতে শুরু করায় আগের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার বাড়বে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ফিচ সলিউশনসের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রবৃদ্ধির এই হার চলতি অর্থবছরে ৬.৫ শতাংশ হবে।


অর্থনীতির গতিময়তা যে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে তা টের পেতে বহুজাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা রেটিং এজেন্সির প্রতিবেদনের দরকার নেই। সাধারণ মানুষ তাদের কর্মক্ষেত্র আর নিত্যদিনের বাজারঘাটের অভিজ্ঞতা থেকেই এই স্থবিরতার প্রভাব অনুভব করতে শুরু করেছে। ফিচের প্রতিবেদন মূল্যস্ফীতির হার ৯.৫ শতাংশ থেকে কমে ৮.৯ শতাংশ হওয়ার কথা বলছে। কিন্তু এই মূল্যস্ফীতিও অনেকের জন্যই চাপ হয়ে যাচ্ছে। কম আয়ের মানুষের কাছে এই চাপ যে অপেক্ষাকৃত বেশি সে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এ অর্থবছরে মূলস্ফীতি ৫.৬ শতাংশ রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। দেশের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে তাই ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতেই সবাইকে সতর্ক ও সংযমী হওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। এই বার্তা মাঠ পর্যায়ে যত দ্রুত এবং যত ব্যাপকমাত্রায় দেওয়া যাবে, ততই কার্যকরভাবে সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। আশার কথা, দেশের সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুগপৎ কাজ করে এরই মধ্যে সংকট মোকাবেলার কিছু বাস্তব উদ্যোগ নিয়েছে। পুরোপুরি না হলেও এসব উদ্যোগের কিছু সুফল দেখা যাচ্ছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতি-অবস্থানটি বৃহত্তর জনগণের কাছে আরো পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করা গেলে জনমনে ভরসা অনেকটাই বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস। মনে রাখতে হবে, আমাদের প্রবৃদ্ধি কিন্তু মূলত ভোগনির্ভর। ফলে ভোক্তাদের আস্থার জায়গাটিই আমাদের নীতি-বিবেচনার কেন্দ্রীয় জায়গায় রাখা চাই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও