চীনের পরাশক্তি স্বপ্নে পশ্চিমা বাগড়া
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে ১৬ নভেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সংক্ষিপ্ত ভাববিনিময়ের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সেখানে শি জিনপিং যেন জাস্টিন ট্রুডোকে কূটনীতির বয়ান দিচ্ছেন। এই ভাববিনিময়ের বিষয়কে অনেকে চীনের সঙ্গে পশ্চিমা সম্পর্কের সন্ধিক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করছেন। জাস্টিন ট্রুডোকে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আপনার দিক থেকে যদি আন্তরিকতা থাকে, তবে আমরা পরস্পর সম্মান প্রদর্শনমূলক মনোভাবের জায়গা থেকে আলোচনা করতে পারি। তা না হলে সম্পর্ক অনিশ্চিত গন্তব্যে প্রবাহিত হতে পারে। এই অদ্ভুত আলোচনা শেষে জাস্টিন ট্রুডোকে রেখেই শি জিনপিং প্রথম হাঁটতে থাকেন। তাতে জাস্টিন ট্রুডো যেন কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে ছিলেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট ও কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার এই মুহূর্তটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ এবং এর ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। যখন পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো চীনকে শোষণ করা শুরু করেছিল, সে সময় চীনের অর্থনীতির আকার ছিল বিশ্বের পুরো অর্থনীতির এক-তৃতীয়াংশ। ১৯৪৯ সালে যখন জাতীয়তাবাদীরা শত বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের পর চীনকে স্বাধীন করতে সক্ষম হন, তখন চীনের জিডিপি বৈশ্বিক অর্থনীতির ৪ শতাংশ ছিল। ১৮৩৯ সালের প্রথম আফিম যুদ্ধ ও চীনের স্বাধীনতার মধ্যকার ১০০ বছরের এই সময়ের পর হাজারো চীনাকে যুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাবে হত্যা করা হয়, যেখানে বিদ্রোহীরা ছিল। একই সঙ্গে দুর্ভিক্ষের কারণেও অনেকে নিহত হয়। ১৮৯৯ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত তথাকথিত বক্সার বিদ্রোহ হয়। এর মাধ্যমে চীনা জনগণ স্বাধীনতা ও তাদের ভূমির সার্বভৌমত্বের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছিল। বক্সারদের হাতে অনেক বিদেশি নিহত হয়। কিন্তু এই বক্সার বিদ্রোহের ফল ছিল ব্যাপক ধ্বংসাত্মক। কারণ বক্সার বিদ্রোহী ও চীনের সামরিক বাহিনীকে পশ্চিমা মিত্ররা ব্যাপকভাবে আক্রমণ করে। সেখানে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও অন্যরা।