আইএমএফের ঋণ : ইতিহাস যা বলে
বছর চল্লিশেক আগের কথা। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ মিল্টন ফ্রিডম্যান (Milton Friedman)-সহ একদল অর্থনীতিবিদ রাষ্ট্র পরিচালনার একটা নতুন ধারণা নিয়ে এলেন; যাতে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নীতি প্রাধান্য পেয়েছে। যাকে আমরা এখন নিওলিবারেলিজম (Neoliberalism) নামে জানি। বাংলায় একে বলা হয় নয়া উদারনীতি বা নয়া উদারনৈতিক মতবাদ।
এই মতবাদের মূল কথা হলো, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রায় শূন্যের ঘরে নিয়ে আসতে হবে, সরকারের খরচ কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে, ট্যাক্স ইত্যাদির হার কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি সব ক্ষেত্রেই জাতীয় ভর্তুকি বন্ধ করে সব কর্মকাণ্ডে ব্যক্তিগত খাতের বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে এবং ধীরে ধীরে রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড ব্যক্তিগত খাতের হাতে তুলে দিতে হবে, পুঁজির অবাধ প্রবাহ অর্থাৎ এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাতায়াত নিশ্চিত করতে হবে।
এই মতামতে কার্যত অর্থনীতির উপর রাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না, বরং রাষ্ট্রের কাজ হবে পুঁজি যেন স্বচ্ছন্দে নিজের বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারে সেটা নিশ্চিত করার জন্যে যত প্রকার প্রশাসনিক ও আইনগত সংস্কার করা প্রয়োজন সেগুলো নিশ্চিত করা।
এই নিওলিবারেলিজম ধারণা ওরা প্রথম রপ্তানি করে চিলিতে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে তখন মিলিটারি একনায়ক অগাস্তো পিনোশে (Augusto Pinochet Ugarte)-এর শাসন চলছে। আপনারা জানেন যে পিনোশে সেখানে গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে তিন দশক ধরে একটি অগণতান্ত্রিক ও নিবর্তনমূলক অপশাসন চালিয়ে গেছে।