বিএনপির আতঙ্ক ছড়ানোর রাজনীতি
বিশ্বব্যাপী কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই এখন জানেন। ডলারের সংকট সব দেশেই তীব্র হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব এক চরম মুদ্রাসংকটে পড়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই মুহূর্তে বিএনপিকে মাঠে চাঙা করার রাজনীতিতে নিরলসভাবে দলীয় নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, কথা বলছেন। তাঁর রাজনৈতিক কণ্ঠ বেশ আকর্ষণীয়, বলেনও গুছিয়ে। তাঁকে একজন শিক্ষিত ও মার্জিত মানুষ বলে দলে এবং দলের বাইরে অনেকেই মনে করেন। তাঁর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন আছেন, যাঁদের নিয়ে তিনি সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতৃত্ব প্রদান করছেন। বিএনপির মূল নেতৃত্ব খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতে। কিন্তু তাঁরা দুজনই দণ্ডিত। খালেদা জিয়া কারারুদ্ধ। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে ঘরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে থেকে ভার্চুয়ালি নেতাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। মাঠে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে অন্যরা দলীয় সভা-সমাবেশগুলোতে অংশ নিচ্ছেন, বক্তৃতা করছেন, দল ও জোটকে ‘সরকার পতনের’ আন্দোলনে প্রস্তুত করছেন। দলীয় সভা-সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মূল বক্তৃতা করছেন তিনি। তিনি অনেক কথাই বলছেন, বিতর্কেরও জন্ম দিচ্ছেন। আবার প্রকৃত সত্যকে চাতুর্যের সঙ্গে মিথ্যার প্রলেপ জড়িয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা হয়তো বিএনপির রাজনীতিরই অংশ। কিন্তু দেশ ও জাতিকে সঠিক তথ্য ও ধারণা দেওয়ার মহান ব্রত নিয়ে যে রাজনীতি এ দেশে একসময় বঙ্গবন্ধু, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ আমাদের জাতীয় নেতারা সৃষ্টি করেছিলেন, তার সঙ্গে এই বক্তৃতার রাজনীতিকে মেলানো যাবে না। এটি আমাদের জাতীয় রাজনীতির এক বড় দুর্ভাগ্য। এই আক্ষেপ শুধু আমার একার নয়, যাঁরা দেশের রাজনীতি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন, তাঁরা পঁচাত্তর-পরবর্তী শূন্য মাঠে হাজিরা দেওয়া বেশির ভাগ নেতার বক্তৃতাকে অনেকটাই গলাবাজি মনে করেন।