জেলহত্যা কি কেবলই কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের কাজ?
বাংলাদেশ নামক দেশটি একদিকে অত্যন্ত ভাগ্যবান আবার আরেকদিকে হতভাগার আরেক নামও বটে। ভাগ্যবান এই কারণে যে বছরের পর বছর চলে আসা পাকিস্তানি নিপীড়ন নির্যাতনের হাত থেকে সাধারণ মানুষের জীবনকে বাঁচাতে এই ভূখণ্ডেই জন্মেছিলেন একজন নেতা যার নাম ছিল শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার মানুষ যাকে ভালোবেসে নাম দিয়েছিল ‘বঙ্গবন্ধু’। অথচ এমনই দুর্ভাগ্য আমাদের যে সেই বন্ধুকেই আমরা হারিয়েছি অত্যন্ত অবহেলায়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ একদিনের ঘটনা ছিল না। এর পেছনের কারণটাও একদিনের নয়। হাজার বছরের ইংরেজ শাসনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া এই উপমহাদেশের মানুষগুলো যখন নিজেদের অস্তিত্বকে স্বতন্ত্রভাবে সাজাতে চেয়েছিল তখনই অধিকার সচেতন এই জাতির কাঁধে ভর করেছিল পাকিস্তানের অসুর। তারা বাংলার মানুষকে কেবল শাসন করেই ক্ষান্ত ছিল না। শাসনের নামে আসলে করছিল শোষণ। শোষিত হতে না চাওয়া বাঙালির সেই লড়াইকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
অথচ মাত্র সাড়ে তিন বছরেই চোখ উল্টে ফেললাম আমরা। যার হাত ধরে স্বাধীনতা এসেছিল সেই তাঁকেই মেরে ফেলা হলো। বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা করে দিলো আমাদের স্বাধীনতার মহাধিনায়কের বুক। এই যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের এই হত্যাকাণ্ড এটা কি কেবলই একটি হত্যাকাণ্ড ছিল নাকি এর পেছনে কাজ করেছিল জানা অজানা শত্রুদের এক বিশাল ষড়যন্ত্র?
না হয় কেন মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতিকে তাঁর পরিবারসহ হত্যা করা হবে? হত্যাকারীরা কেবল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত থাকেনি। একই বছরের ৩ নভেম্বর হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুর চার সেনাপতিদেরও। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমাদের স্বাধীনতার অপর চার নেতাকে গ্রেফতার করে জেলে রাখা হয়েছিল।
- ট্যাগ:
- মতামত
- জেলহত্যা দিবস