ঢাকার ফুটপাত : দিনে চাঁদা ওঠে ৬ কোটি টাকা, নিয়ন্ত্রণে শাসক দলের ২২ জন
ঢাকার সূত্রাপুর থানার শ্যামবাজার থেকে বাহাদুরশাহ পার্ক হয়ে লক্ষ্মীবাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে এক হাজারের বেশি ছোট চৌকি বসানো, আছে বেশ কিছু রিকশাভ্যানও। এসব চৌকি ও রিকশাভ্যানে কাপড়চোপড়, প্রসাধনী, জুতা, বিছানার চাদর, মশারি, খেলনা, ফলমূল, শরবত, খাবার, গৃহস্থালি জিনিসপত্রসহ নানা ধরনের পণ্য সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। তবে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে চার হাত আয়তনের একেকটি চৌকি বা রিকশাভ্যান বসাতে তাঁদের অগ্রিম দিতে হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর পণ্যের ধরন অনুযায়ী দৈনিক একজন হকারকে দিতে হয় ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
কে বা কারা নেন এই টাকা, এমন প্রশ্নে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুরের ফুটপাতের ফাস্ট ফুড বিক্রেতা সৈয়দ তানভীর জিলানি প্রথম আলোকে বলেন, হকারদের কাছ থেকে চাঁদা তোলেন ‘লাইনম্যান সরদার’ মো. ফিরোজের লোকজন। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে লাইনম্যান ও তাঁর সহযোগীরা মারধর করেন, মালামাল ফেলে দেন। ফিরোজ ও তাঁর দলবলের লোকজন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা বলে পরিচয় দেন।
বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের তথ্য বলছে, শুধু এই এলাকা নয়, গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, মিরপুর, উত্তরাসহ রাজধানীর ৬৫টি এলাকায় ফিরোজের মতো অন্তত ৩৮ জন লাইনম্যান সরদারের নেতৃত্বে ফুটপাতে হকার বসানো হয়। এসব হকারের কাছ থেকে চাঁদা তোলার জন্য নিযুক্ত আছেন দেড় শতাধিক লাইনম্যান। চাঁদা তোলার জন্য প্রত্যেক লাইনম্যানের সঙ্গে পাঁচ-সাতজন করে সহযোগী থাকেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রভাবশালী রাজনীতিক ও একশ্রেণির পুলিশ সদস্য মিলে লাইনম্যান সরদার ও লাইনম্যান নিয়োগ দেন। কোনো কোনো এলাকায় ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- চাঁদাবাজি
- ফুটপাতের হকার
- চাঁদা আদায়