কারাগারে রাজার হালে
১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গুলি ও গ্রেনেড হামলা চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা।
চাঞ্চল্যকর এ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সৈয়দ নাজমুল মাকসুদ মুরাদ ও সোহেল ওরফে ফ্রিডম সোহেল আছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে। কারাবিধি অনুযায়ী কয়েদির পোশাক পরিয়ে তাদের (কয়েদি) জন্য নির্ধারিত ভাওয়াল ভবনে রাখার কথা।
কিন্তু বিধি ভেঙে এই দুজনকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রাখা হয়েছে হাজতি ভবনের ‘ভিআইপি’ রুমে। বিনোদনের জন্য রুমের দেওয়ালে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে ৪০ ইঞ্চি স্মার্ট টেলিভিশন। কার্পেট করা মেঝেতে আছে নরম বিছানা। আছে টেবিল ক্লথে মোড়ানো টেবিল। রুম শীতল করতে চলে টেবিল ফ্যান। দেওয়ালে লাগানো বেসিন। জানালায় দামি পর্দা। বাথরুমে হাই কমোড। পানি গরমের জন্য আছে ওয়াটার হিটার। চা, কফি, হরলিক্স বানাতে দেওয়া হয়েছে ইলেকট্রিক কেটলি। জীবনযাপনের আধুনিক সব সরঞ্জাম নিয়ে কারাগারে ৮ বছর ধরে কুখ্যাত এই দুই বন্দি আছে রীতিমতো ‘রাজার হালে’। এমনকি তারা আদালতে যাতায়াত করতে দামি পোশাকের ওপর চাপান ব্লেজার। এই পোশাক রাখার জন্য রুমে আছে ওয়াল হেঙ্গারের ব্যবস্থা।
শুধু মুরাদ ও সোহেল নয়, যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, কাশিমপুর কারাগার ১, ২, ৩ (মহিলা ইউনিট), ৪ (হাই সিকিউরিটি) এবং কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রুম সাজিয়ে বাসার আরামে বিলাসী জীবনযাপন করছেন শতাধিক বন্দি। সার্বক্ষণিক মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সুবিধা ব্যবহার করে কারাগারে বসেই বাইরের নিজ নিজ জগৎ চালাচ্ছেন তারা। এদের মধ্যে আছেন পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, খুনি, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা। কারাভ্যন্তরে তারা ‘ভিভিআইপি’ ও ‘ভিআইপি’ বন্দি হিসাবে পরিচিত। কারাবিধি লঙ্গন করে এই বন্দিদের আয়েশি জীবনের নিশ্চয়তা দিয়ে মাসে কোটি টাকার বাণিজ্য করছেন কারাগারের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা। কারাভ্যন্তরের একাধিক সূত্রে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানা গেছে। ‘ভিআইপি’ রুমের হালচালের ভিডিও ও বন্দিদের সার্বক্ষণিক মোবাইল ফোন ব্যবহারের ছবিও এসেছে যুগান্তরের হাতে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- বিশেষ সুবিধা
- ভিআইপি
- কারাবন্দি