কৃষকের খাঁড়ার ঘা শস্যবীজের দাম
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে মোটরসাইকেলে চেপে ৯ কিলোমিটারের পথ। কেরানীগঞ্জের তারানগরের কাঁঠালতলী গ্রাম। ডানে-বাঁয়ে, যে পাশে চোখ যায় ফসলের মাঠ। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই গতর খাটিয়ে ক্ষেতে ফসল ফলান, কেউ আবার পশু পালন করে সংসার চালান। দরজায় কড়া নাড়ছে শীত, তাই মাঠে মাঠে হরেক জাতের সবজির দোল। চাষবাসে কৃষকের কাটছে ব্যস্ত সময়।
যেন জগতের সব হতাশা নিয়ে ক্ষেতে নিড়ানি দিচ্ছিলেন চাষি জগৎ চন্দ্র দাস। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলছিলেন, 'কৃষকের কপালে শান্তি নেই, সব দিকেই মরণ। দুই বিঘা জমিতে এবার ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মুলা চাষ করছি। তবে জ্বালানি তেল, সার ও কীটনাশকের দর বাড়ায় সবজি আবাদ করে লাভ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে আছি উৎকণ্ঠায়। এবার শস্যবীজের অস্বাভাবিক দাম দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে আরও।' শুধু জগৎ চন্দ্রই নন, বীজ নিয়ে এখন দেশের অধিকাংশ চাষির কপালেই দুশ্চিন্তার রেখা।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রায় দ্বিগুণ দামে শস্যবীজ বেচাকেনার খবর আসছে। গত ১৮ অক্টোবর ধান, গম, ভুট্টা, সরিষাসহ বিভিন্ন শস্যবীজের নতুন দাম বেঁধে দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। এতে ডিলার ও কৃষকদের আগের চেয়ে কোনো কোনো বীজ প্রায় দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। প্রকারভেদে ১০ কেজি বস্তার ধানবীজ ৫৭০ থেকে ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। এ ছাড়া বেড়েছে সবজিবীজের দামও। আর আমদানি করা বীজের দাম এখন লাগামছাড়া।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- মূল্যবৃদ্ধি
- বীজ