সঞ্চয় ভেঙে সংসারে
যশোরের একটি ব্যাংকে পাঁচ বছর মেয়াদি ডিপিএস (কিস্তিভিত্তিক সঞ্চয়) খুলেছিলেন বেসরকারি চাকুরে মোরশেদ আলম। প্রতি মাসে জমা রাখছিলেন ২ হাজার টাকা। বাজারে সব জিনিসের দর বাড়ায় সংসার চালাতে গিয়ে খেই হারান মোরশেদ। খরচ বাড়লেও বাড়েনি তাঁর আয়। নিরুপায় হয়ে ১৮ মাস কিস্তি দেওয়ার পর গত আগস্টে তিনি ডিপিএস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে যান। আরেকটি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় তিন বছর মেয়াদি ডিপিএস খুলেছিলেন রাজধানীর বাড্ডার রেহেনা আক্তার। গত ডিসেম্বরে খোলা ডিপিএসে প্রতি মাসে জমা করতেন ৩ হাজার টাকা। তবে ৯ মাসের মাথায় টাকাপয়সার টানাটানিতে গত সেপ্টেম্বরে ডিপিএসের হিসাব গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন রেহেনা।
সাম্প্রতিক সময়ে বাজারের পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাওয়ার হার গেল এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। আবার ব্যাংকে টাকা রেখে যে মুনাফা মিলছে তাও সব খরচ বাদে খুব সামান্য। ফলে মোরশেদ আলম ও রেহেনা আক্তারের মতো অনেকেই এখন সঞ্চয় থেকে সরে গেছেন। গত আগস্টে ব্যাংক আমানতের গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, অথচ মূল্যস্ম্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। এতে সঞ্চয়ের বিপরীতে যে আয় আসছে তা দিয়ে তেমন লাভ হচ্ছে না। ফলে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ খরচের চাপে পড়ে সঞ্চয় ভাঙছে। বাসা ভাড়া, সন্তানের স্কুল, যাতায়াতসহ অন্য সব খরচও বাড়বাড়ন্ত। ফলে হাত পড়ছে সঞ্চয়ে। সংসারের চাকা ঘোরাতে অনেকে আবার ঋণের জাঁতাকলে পড়ছেন। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের ভোক্তা ঋণ ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ৯৫ হাজার ৪১৯ কোটি টাকায় উঠেছে। ব্যক্তি পর্যায় কিংবা অন্য নানা মাধ্যম থেকেও ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছেন অনেকে।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- সংসার খরচ
- সঞ্চয় ভাঙ্গা