জোরদার হয়নি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন টানা বাড়তে বাড়তে এখন চাহিদার চেয়ে প্রায় ৪৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে বাড়েনি বিদ্যুৎ সরবরাহের সঞ্চালন লাইন। বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর সুপারিশ করা হলেও গড়ে ওঠেনি সঞ্চালনের আধুনিক অবকাঠামো। সমন্বয়হীনতার অভাব আছে উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে। ফলে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা জোরদার হয়নি।
জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের জন্য সমন্বয়হীনতা ও অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন বিদ্যুৎ খাত–সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ২০০৭ ও ২০১৪ সালে দুটি বড় বিপর্যয়ের পর সঞ্চালন অবকাঠামো আধুনিক করার সুপারিশ করা হয়েছিল। এরপর সঞ্চালন খাতে নানা প্রকল্প নেওয়া হলেও তা নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না। নিয়মিত ব্যবধানে বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদ।
উৎপাদন কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার লাইন হিসেবে কাজ করে জাতীয় গ্রিড। গত মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চল জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় অংশ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এর আগে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর আরও বড় বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল জাতীয় গ্রিডে। ওই সময় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ সঞ্চালনব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল করা এবং কারিগরি সব ব্যবস্থার উন্নয়নসহ মোট ৩২টি সুপারিশ করা হয়েছিল। তাতে ছয় ঘণ্টা ধরে চার ভাগে ভাগ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের ফ্রিকোয়েন্সি (কম্পাঙ্ক) নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত কমিটি বলেছিল, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। এ জন্য চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এরপর আট বছর পার হলেও সব কটি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনায় আনা যায়নি। এরই মধ্যে আরও অন্তত তিনবার জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় ঘটেছে।