মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের এই আক্ষেপে যেন দেশবাসীর হতাশাও প্রতিফলিত- 'কাকে বিশ্বাস করব?' দেশব্যাপী চলমান এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার মধ্যে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে যেখানে খোদ পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন, সেখানে কাকে বিশ্বাস করা যায়? পরীক্ষা-সংক্রান্ত যে কোনো অনিয়ম রোধ করার দায়িত্ব যে শিক্ষকের; তিনিই এমন অপকর্মে জড়িত! বিশ্বাস করাও কঠিন বটে। নেহাল উদ্দিন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান যেভাবে প্রথম দিনই থানায় সংরক্ষিত একটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র আনতে গিয়ে আরও পাঁচটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র নিয়ে এসেছেন এবং অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন, তাতে ত্ার অপরাধী মনোবৃত্তিই স্পষ্ট।
আমরা আশঙ্কা করি, শিক্ষক নামের ওই কলঙ্ক এবং তাঁর সহযোগীরা অতীতে একই ধরনের দুস্কর্ম করেছেন। অপরাধের বিচারের প্রশ্নে নয়; শিক্ষকের ওপর সমাজের বিশ্বাসভঙ্গের জন্যও এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরুরি। আমরা এও আশা করি- আটকদের শাস্তি এবং সংশ্নিষ্ট কয়েকজনের বরখাস্ত ও বদলির মধ্য দিয়েই দেশবাসীকে হতবাক করে দেওয়া এই কাণ্ডের সমাপ্তি ঘোষণা হবে না। যারা নানা মাত্রায় জড়িত ছিল এবং যাদের অবহেলায় প্রশ্ন ফাঁসের সুযোগ তৈরি হয়েছে; প্রত্যেককে জবাবদিহি করতে হবে।
স্বীকার করতে হবে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্প্রসারণের পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভূতপূর্ব সব পদ্ধতি উন্মোচিত হওয়ার পর সরকারও অভিনব সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। সর্বশেষ কয়েক বছর আগে নেওয়া মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার সাত দিন আগে থেকে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার উদ্যোগও বাস্তবায়িত হয়েছিল। আমাদের মনে আছে, ছাপাখানা থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার যে মহামারি কিছুদিন দেখা গিয়েছিল; তাও বন্ধ করা গেছে গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায়।