রাজা তৃতীয় চার্লস এবং রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের জন্য এক অনিশ্চিত সময়ে সিংহাসনে বসলেন তার বড় ছেলে রাজা তৃতীয় চার্লস। যুক্তরাজ্য এবং এর কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে রাজতন্ত্র বিরোধিতা এবং প্রজাতন্ত্রের দাবি বেড়েই চলেছে। ওদিকে রাজদায়িত্ব থেকে পরিবারের তিন সদস্য সরে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের রাজকীয় দৃশ্যপটেও বদলে এসেছে। সাসেক্সের ডিউক এবং ডাচেস স্বেচ্ছায় রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। আর সতের বছর বয়সী এক কিশোরীর সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারির জেরে যুবরাজ অ্যান্ড্রুকে রানীর আদেশেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, নতুন রাজা দীর্ঘদিন ধরেই স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন যে, তিনি রাজপরিবারের আকার আরও ছোট করে ফেলবেন এবং রাজকীয় আড়ম্বরও কমিয়ে আনবেন। কারণ জনগণের টাকায় রাজপরিবারের বিশাল ব্যয়ভার বহন নিয়ে বহুদিন ধরেই সমালোচনা চলে আসছিল। কোনো রাজতন্ত্রই চিরকাল একই রকম থাকে না। সময়ের পরিবর্তনে যেকোনো রাজতন্ত্রের ভূমিকাও রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বিবর্তনের সঙ্গে বদলে যায়। সামনের বছরগুলোতে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের কাছ থেকে ঠিক কী আশা করা যায়, তা বোঝার জন্য আমাদের বিশ্বের আরও যে ৪৩টি দেশে এখনো রাজতন্ত্র টিকে রয়েছে তাদের দিকে তাকাতে হবে। এসব দেশেও বর্তমানে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে একজন রাজা রয়েছেন। অবশ্য, এগুলোর মধ্যে আবার ১৫টি দেশই ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত। এই রাজতন্ত্রগুলোকে আমরা মোটামুটি চার ভাগে ভাগ করতে পারি: আনুষ্ঠানিক, সাংবিধানিক, শক্তিশালী এবং নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র।
আনুষ্ঠানিক রাজারা : কিছু দেশে রাজতন্ত্র রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে সম্পূর্ণ আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করে; যেখানে রাজার কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত-গ্রহণ ক্ষমতা প্রয়োগ করার সুযোগ নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে এই রাজতন্ত্রগুলোর ভূমিকা সংবিধানের মাধ্যমে কঠোরভাবে সীমিত করে রাখা হয়েছে। জাপানের সংবিধানে বলা হয়েছে, ‘সম্রাট শুধুমাত্র সংবিধানে দেওয়া রাষ্ট্রীয় কাজগুলো করবেন এবং সরকার পরিচালনার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো ক্ষমতা তার থাকবে না।’ আর ডায়েটে (জাপানি আইনসভা) নির্বাচিত হওয়ার পরই শুধু সম্রাট কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন।