দান না করেও সদকার সওয়াব
আমরা জানি, দান-সদকা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম, যা পালন করতে গেলে অর্থের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ দান-সদকা ইত্যাদি হলো আর্থিক ইবাদতের অংশ। যার যত বেশি অর্থ আছে, সে তত বেশি এই ইবাদতে আত্মনিয়োগ করতে পারে। ফলে ধনীদের মধ্যে যারা ঈমানদার তাদের নেক আমলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ বেশি।
এ বিষয়টি কিছু সাহাবিকে ভাবিয়ে তোলে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে নবীজি (সা.)-এর দারস্থ হলে, নবীজি (সা.) তাঁদের এর উত্তম সমাধান দেন। যার মাধ্যমে অর্থ না থাকলেও সদকার সওয়াব পাওয়া যাবে।
আবু জার (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.)-এর কিছুসংখ্যক সাহাবি তার কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, ধন-সম্পদের মালিকরা তো সব সওয়াব নিয়ে নিচ্ছে। কেননা আমরা যেভাবে নামাজ আদায় করি, তারাও সেভাবে আদায় করে। আমরা যেভাবে সিয়াম পালন করি, তারাও সেভাবে সিয়াম পালন করে। কিন্তু তারা তাদের অতিরিক্ত সম্পদ দান করে সওয়াব লাভ করছে। অথচ আমাদের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি (সা.) বললেন, আল্লাহ তাআলা কি তোমাদের এমন কিছু দান করেননি, যা সদকা করে তোমরা সওয়াব পেতে পার? আর তা হলো প্রত্যেক তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) একটি সদকা, প্রত্যেক তাকবির (আল্লাহু আকবার) একটি সদকা, প্রত্যেক তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) বলা একটি সদকা, প্রত্যেক ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা একটি সদকা, প্রত্যেক ভালো কাজের আদেশ দেওয়া এবং মন্দ কাজ করতে দেখলে নিষেধ করা ও বাধা দেওয়া একটি সদকা। এমনকি তোমাদের শরীরের অংশে সদকা আছে। অর্থাৎ আপন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করাও একটি সদকা। সাহাবিরা বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমাদের কেউ তার কাম প্রবৃত্তিকে চরিতার্থ করবে বৈধ পথে আর এতেও কি তার সওয়াব হবে? তিনি বলেন, তোমরা বলো দেখি, যদি তোমাদের কেউ হারাম পথে নিজের চাহিদা মেটাতে জিনা করত তাহলে কি তার গুনাহ হতো না? অনুরূপভাবে যখন সে হালাল বা বৈধ পথে কামাচার করবে তাতে তার সওয়াব হবে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২২১৯)