আসন্ন বৈশ্বিক মন্দায় বাংলাদেশের করণীয়
কভিডকালে, এমনকি রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ-পরবর্তী সময়ে বিশ্বে সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পণ্য সরবরাহ বাধার মুখে পড়েছে। অন্যদিকে বিশ্বের বৃহত্তম উৎপাদক চীনেও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে পণ্য উৎপাদনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এভাবে দেশে দেশে সরবরাহ ও উৎপাদন ব্যবস্থায় সংকটের কারণে মূল্যস্টম্ফীতি বেড়ে গেছে এবং মূল্যস্টম্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে গিয়ে প্রায় সব দেশেই সুদের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব বিবেচনায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, বিশ্বব্যাংক কয়েক মাস ধরেই বিশ্বব্যাপী মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। এমনকি বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় এ বিষয়ে সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছেন।
বস্তুত বিশ্ব এক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আছে এবং আরও সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে- এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। দিন দিন বাড়ছে মূল্যস্টম্ফীতি। আর তা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নীতি সুদহার ক্রমাগত বাড়িয়েই চলেছে। মূলত এই কারণ উল্লেখ করেই বিশ্ব অর্থনীতি ২০২৩ সালে মন্দার দিকে এগিয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ বিষয়ে সম্প্রতি সংস্থাটি যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তার শিরোনাম- 'বিশ্বে কি মন্দা আসন্ন?' মূল্যস্টম্ফীতি কমাতে কিছুদিনের মধ্যেই বৈঠকে বসতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। রানী এলিজাবেথের প্রয়াণের কারণে বৈঠকটি কিছুদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য বৈঠকটি সামনে রেখেই সম্ভবত বিশ্বব্যাংক গবেষণাটি করেছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিশ্বে অর্থনৈতিক শক্তির দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপ। এই তিন শক্তির অর্থনীতির চাকা গতি বা শক্তি হারাচ্ছে। এর মধ্যে আগামী বছরে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর মাঝারি কোনো আঘাত এলেও তার পরিণতি গড়াতে পারে মন্দায়। এই মন্দায় মারাত্মক পরিণতি ভোগ করবে মূলত বিকাশমান বাজার ও অর্থনীতির দেশগুলো।
- ট্যাগ:
- মতামত
- অর্থনৈতিক সংকট
- বৈশ্বিক মহামন্দা