শিক্ষাগুরুর অমর্যাদা যে সমাজে
আমরা যে সমাজে বা রাষ্ট্রে বসবাস করি, সেখানে শিক্ষকের মর্যাদা কেমন তা সম্প্রতি কিছু (অ)বর্ণনীয় ঘটনা থেকে স্পষ্ট। যে শিক্ষকের মর্যাদা আজ ভূলুণ্ঠিত, আর যে ছাত্ররা এমনটা করেছে, তারা কেউই এই সমাজের বাইরে না। আসলে ব্যক্তির আচরণ অনেকটাই রাষ্ট্রের আচরণের ওপর নির্ভর করে। তাই, শিক্ষকের প্রতি অসম্মানের বিষয়ে আলোকপাত করতে গেলে, স্বাধীনতা-উত্তরকালে শিক্ষকদের প্রতি রাষ্ট্রের আচরণ পর্যবেক্ষণ করার বিকল্প নেই। এরশাদের মিলিটারি শাসনামলে, শিক্ষক অমর্যাদার বিষয়টা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
এরশাদের বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে যে বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিবাদ হয়, তার সিংহভাগ হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্যোগে আর প্ররোচনায়। তাই এরশাদ সরকার শিক্ষকদের জেল, জরিমানা, চাকরিচ্যুত করা থেকে শুরু করে, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বসার ব্যবস্থা করেন ১৬তম সারিতে। কী সাংঘাতিক জিঘাংসা রাষ্ট্র কর্র্তৃপক্ষের! যে শিক্ষকের কাছে পড়ে, তারই ছাত্র-ছাত্রীরা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপি, সচিব হয়, সেই শিক্ষকের অবস্থান হলো, এদের সবার পরে। এরই ধারাবাহিকতায়, মুক্ত জ্ঞানের চর্চা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের শিক্ষা অথবা অধিকার ও বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, অনেক শিক্ষককে হতে হয়েছে কারাবন্দি, চাকরিচ্যুত অথবা পেশাগতভাবে অন্য কোনো নিগ্রহের শিকার।
- ট্যাগ:
- মতামত
- শিক্ষা
- আত্মমর্যাদা
- মর্যাদা
- পদমর্যাদা