মীর কাসেম আলীর অনুপস্থিতিতে জামায়াতের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে?
মীর কাসেম আলীকে মনে করা হতো জামায়াতের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড। আশির দশকের শুরুতে তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে একের পর এক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা ট্রাস্ট, দিগন্ত মিডিয়া, কেয়ারি লিমিটেডের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছিল তার হাত ধরে। ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এ জামায়াত নেতা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। দেশী-বিদেশী অন্তত ৪০টি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মীর কাসেম আলীর গ্রেফতার ও মৃত্যুদণ্ডের ফলে জামায়াত ঘরানার এসব প্রতিষ্ঠান পর্যুদস্ত বা দলটির হাতছাড়া হয়েছে।
২০১২ সালের ১৭ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার হন মীর কাসেম আলী। এরপর তার বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ে দুটি অভিযোগে তার ফাঁসি ও আটটি অভিযোগে কারাদণ্ড হয়। ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় তার।
জামায়াত-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দলটির মতাদর্শের অনুসারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি সংগঠনটির আর্থিক জোগানের উল্লেখযোগ্য অংশ আসত মীর কাসেম আলীর মাধ্যমে। ২০১২ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া পর্যন্ত তিনি কারাগারেই ছিলেন। এ সময়ে মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলো হয় পর্যুদস্ত হয়েছে, নয়তো জামায়াত সমর্থিতদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। এতে এক দশকে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর আর্থিক সক্ষমতাও ভঙ্গুর হয়েছে।