ভ্যাট আদায়ের সাতকাহন
গতানুগতিকভাবেই মিডিয়ায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ পাচ্ছে যে, প্রত্যাশা অনুযায়ী ভ্যাট আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না বলে ঘাটতি বেড়েই চলেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভ্যাটের লক্ষ্যমাত্রা বেশি হলেও আদায় কম। বলা হচ্ছে, বৈশ্বিক অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব, অন্যান্য বছরের তুলনায় উন্নয়ন প্রকল্পে অনুমোদন কমে যাওয়া, ভ্যাট আহরণের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের শৈথিল্য, ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি এবং মাঠ প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবে ভ্যাট আদায়ে বিপর্যয় নেমে এসেছে। চলতি অর্থবছরের আগস্ট মাসে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। সাময়িক হিসাবে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৫৩ কোটি টাকা।
শুধু আগস্ট মাসেই ঘাটতির পরিমাণ ১ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। যদিও এই সময়ে এনবিআরের গড় প্রবৃদ্ধি ৬.৫৯ শতাংশ, আমদানি-রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ২০.০৪ শতাংশ, আয়কর খাতে প্রবৃদ্ধি ২.৭৯ শতাংশ। অথচ রাজস্ব আহরণের প্রধান খাত ভ্যাটের অবস্থা উদ্বেগজনক। ভ্যাট আদায়ের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক অর্থাৎ মাইনাস ২.৯৬ শতাংশ। সরকারি প্রকল্পের উৎসে কর ছাড়া ভ্যাটের আরেকটি বড় স্টেকহোল্ডার সিগারেট কোম্পানিগুলো। কিন্তু এবারের বাজেটে এ ক্ষেত্রে বেশি রাজস্ব পাওয়া যাবে এই ধরনের কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আগের থেকে একটু বাড়ানো হলেও তা বাস্তব পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট নয়। ভ্যাট আদায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে গিয়ে অন্যরা বৈষম্যের শিকার হয় বলে অভিযোগ রয়েছে, যার প্রভাব পড়ে সার্বিক ভ্যাট আদায়ে। এসব বৈষম্যের নিরসন না হলে ভ্যাট আদায় বাধাগ্রস্ত হবে বলে বিশ্লেষণে উঠে আসছে।