শেখ হাসিনা খালি হাতে ফিরে যেতে আসছেন না

কালের কণ্ঠ জয়ন্ত ঘোষাল প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:০৬

এর আগেরবার যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে এসেছিলেন, তখন ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউসে মোদি-হাসিনার বৈঠকের পর মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। হায়দরাবাদ হাউসে আয়োজিত সেই মধ্যাহ্নভোজে উপস্থিত ছিলাম। সেদিন দেখেছিলাম, কত যত্ন নিয়ে শেখ হাসিনার আপ্যায়ন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সময় খাবারের মেন্যুটা পর্যন্ত এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে বাংলাদেশ আর ভারত দুই দেশেরই ব্যঞ্জনের বৈচিত্র্য থাকে। সেখানে বাংলাদেশের খাবার যেমন ছিল, তেমনি ছিল ভারতীয় নিরামিষ ভোজনের ব্যবস্থা। মনে আছে, সেই সময় উত্তর ভারতে নবরাত্রি চলছিল। নরেন্দ্র মোদি নবরাত্রি পালন করেন। সেই সময় তিনি কোনো কিছুই খান না, সারা দিন শুধু ফলের রস খেয়ে থাকেন। তবে যাঁরা নবরাত্রি পালন করছেন তাঁদের জন্য এক রকম ব্যবস্থা ছিল, আবার বাংলাদেশের অতিথিদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা ছিল। এ তো গেল খাওয়াদাওয়ার আয়োজন।


গতবার অজিত দোভাল এবং অন্য কর্তাব্যক্তিরা বিভিন্ন টেবিলে এমনভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসেছিলেন, যাতে আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পারস্পরিক আদান-প্রদান হয়। শিল্পপতি আদানি সেবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সেই মধ্যাহ্নভোজের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সেই সব বৈঠকের ফাঁকে ফাঁকে যাঁরা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও পরিবহন পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁদের সঙ্গে আদানির খোলামেলা আলোচনা চলছিল।


এবার শেখ হাসিনার আরেকটি সফর। তাঁর এবারের সফর আরো তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা এমন একটা সময় এই সফরটা হচ্ছে যখন ২০২৩ সালে বাংলাদেশের নির্বাচন আসন্ন। আবার নরেন্দ্র মোদিরও লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সালে হতে চলেছে। বাংলাদেশ এখন নানা কারণে উত্তাল। মৌলবাদী শক্তি শেখ হাসিনা এবং ভারতের যৌথ বিরোধিতা শুরু করেছে। ভারত বিরোধিতার তাস ব্যবহার করে সেই সব মৌলবাদী শক্তি শেখ হাসিনার বিরোধিতা করছে। তারা সংখ্যালঘু হিন্দুবিরোধী, হাসিনাবিরোধী ও ভারতবিরোধী—এই ত্রয়ী প্যাকেজ নিয়ে আসরে নেমেছে।


ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে লন্ডন শহরে বসেও তালেবানি ও মৌলবাদী শক্তিরা সক্রিয়। বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে হাসিনাকে দুর্বল করার জন্য মৌলবাদী ষড়যন্ত্রের হাব হয়ে উঠেছে লন্ডন। এমনও সন্দেহ রয়েছে যে চীনা রাষ্ট্রের একাংশ সেই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত। স্বভাবতই শেখ হাসিনার এই সফর নিয়ে ভারত অনেক বেশি সচেতন।


বাংলাদেশের প্রতি ভারতের যে কর্তব্য বা দায়িত্ব সেটা শুধু বাংলাদেশের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার জন্য নয়। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ওপর ভারতের নির্ভরশীলতা উপমহাদেশে শান্তি বজায় রাখার জন্যও জরুরি। কেননা বাংলাদেশের যে জিওস্ট্র্যাটেজিক পজিশন, বিশেষত ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে নয়া ঠাণ্ডাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তা আরো বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই কারণে এবার শেখ হাসিনার সফরের মর্যাদা ও তাৎপর্য অনেক।


শেখ হাসিনা খালি হাতে ফিরে যেতে আসছেন না। তাঁকে নানা দিক থেকে অভ্যর্থনা জানাতে ভারত এবার প্রস্তুত। পাঁচটা থেকে সাতটা এমওইউ স্বাক্ষরিত হবে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। নেপাল থেকে জিএমআরের মতো কম্পানি বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ নিয়ে যাবে ভারতের মধ্য দিয়ে, সে ব্যাপারেও বোঝাপড়া হবে। কুশিয়ারা এবং আরো বেশ কিছু নদী নিয়ে একটা চুক্তি করা হবে, যাতে এই মুহূর্তে যত দিন না তিস্তা চুক্তি হচ্ছে, তার বিকল্প হিসেবে যাতে বাংলাদেশে পানির কোনো অভাব না থাকে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও