চা শ্রমিকদের ঔপনিবেশিক বঞ্চনা

দেশ রূপান্তর নাজমুল আহসান প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৫০

সকাল, বিকাল, কিংবা সন্ধ্যা এককাপ গরম চা ছাড়া আমাদের কিছুতে চলে না। স্বাভাবিকভাবেই চায়ের মতো একটি বহুল প্রচলিত পানীয়তে ঔপনিবেশিকতার আঁচড় খোঁজা বাহুল্য বা আপাতদৃষ্টিতে অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে। কারণ ঔপনিবেশিক শব্দটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে সারা পৃথিবীতে স্থানীয় বা নেটিভদের ওপর কাঠামোগত বঞ্চনা ও অধস্তনতা। তাই চা ঔপনিবেশিক পানীয় কিনা তা বুঝতে কিছুটা ইতিহাসের দারস্থ হতে হয়।


সবারই জানা, ভারতীয় উপমহাদেশে চা পানের অভ্যাস ও এর উৎপাদন শুরু হয় ব্রিটিশ বেনিয়াদের হাত ধরে এবং অবশ্যই ঔপনিবেশিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। তারও আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৬৬৪ সালে ইংল্যান্ডে চায়ের আমদানি শুরু করে। তারপর থেকে চা ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অন্যতম ব্যবসায়িক পণ্য। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে কোম্পানি ইংল্যান্ডে চা সরবরাহে চীনের পাশাপাশি ভারতের দিকে মনোযোগ দেয়। ১৮৫৮ সালে শাসনব্যবস্থা ব্রিটিশ সরকারের হাতে হস্তান্তর হলেও কোম্পানিকে অনুসরণ নতুন প্রশাসন ভারতে চা চাষে প্রণোদনা অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৮৮ সালে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডে চায়ের আমদানির উৎস বিবেচনায় চীনকে ছাড়িয়ে যায় ভারত। তবে সেই সময় চায়ের শুধু ব্যবসায়িক গুরুত্বই ছিল না রাজনৈতিকভাবে গুরুত্ব পেতে শুরু করে চা। ভারত ও শ্রীলঙ্কার সস্তা চায়ের প্রভাবে ধীরে ধীরে ইংল্যান্ডের নাগরিকদের জীবনযাত্রার অংশ হয়ে যায়, আরও আট-দশটা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মতো। যার প্রথম অফিশিয়াল স্বীকৃতি আসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন ব্রিটিশ সরকার চায়ের দাম ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিজেই দায়িত্বভার গ্রহণ করে। অন্যদিকে প্রায় সমসাময়িক কালে আরও সস্তায় চায়ের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ভারতে ব্রিটিশরাজ ও তার বেনিয়া গোষ্ঠী ভারতে চা শ্রমিক নিষ্পেষণ ও বঞ্চনার মাত্রা আরও বড়িয়ে দেয়।


ব্রিটিশ ভারতে আসাম ছিল শুরুর দিককার বৃহৎ পরিসরে চা উৎপাদন কেন্দ্র। সিলেটে প্রথম চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয় মালনিছড়াতে ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি, আর এটাই বর্তমান বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক চা বাগান।


ভারতে চা চাষের শুরুটাই হয় প্রতারণা ও বঞ্চনার হাত ধরে। এই অঞ্চলের জঙ্গল, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে বাগান সৃষ্টি করা ও তদারকির জন্য ভারতের বিহার, মধ্যপ্রদেশ, মাদ্রাজসহ বিভিন্ন অঞ্চলের নিম্নবর্গের জনগোষ্ঠীকে যুক্ত করে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো। যার পেছনে ছিল উন্নত জীবনের মিথ্যা আশ্বাস ও প্রলোভন। যদিও এই প্রলোভন দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি আর এখানেই ঔপনিবেশিক বঞ্চনা বেশি প্রাসঙ্গিক। ইতিহাস বলে, চা শ্রমিকদের প্রতি ইংরেজ মালিকদের অন্যায় ও নিগ্রহ চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে। ব্রিটিশ নাগরিকদের স্বস্তি দেওয়ার বিপরীতে চা শ্রমিকদের প্রতি বঞ্চনা ও অন্যায় যেন বেড়ে গেল আরও একধাপ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও