আগামী নির্বাচন সরকারি দলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের মনে করেন, যেসব কারণে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়েছে, তার সব লক্ষণই বাংলাদেশে শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও আমলা—এই তিন গোষ্ঠীর যোগসাজশে দেশের টাকা বিভিন্নভাবে লুটপাট ও বিদেশে পাচার হচ্ছে। এই ট্রায়াঙ্গেল (ত্রিভুজ যোগসাজশ) থেকে রক্ষা পেতে গেলে নির্বাচনব্যবস্থা সুষ্ঠু হওয়া দরকার।
তাঁর ধারণা, বর্তমান সরকার যে করেই হোক, আবারও ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে। এ ক্ষেত্রে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) একটা শান্তিপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে। তবে দেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ২০২৩ সালে একেবারে সাজানো নির্বাচন করা সহজ হবে না। ক্ষমতার নিয়ামক শক্তি হিসেবে জাতীয় পার্টি ভবিষ্যতে ওই সিদ্ধান্তই নেবে, যা জনগণের স্বার্থের পক্ষে যায়। এমন আরও অনেক বিষয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন।
জি এম কাদের: রাষ্ট্র পরিচালনা যদি গণতান্ত্রিকভাবে হয়, তাহলে রাষ্ট্রের ভেতরে সব সংগঠন গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হবে—এ রকম কোনো যুক্তি নেই। এটা একটা ভুল ধারণা। অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষকেও আমি কথাটা বলতে শুনেছি। একটা রাষ্ট্র যদি গণতান্ত্রিকভাবে চলে, তাকে অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা করতে হয় না। কারণ, এটা প্রতিযোগিতার বিষয় নয়, রাষ্ট্রকে পরিচালনার বিষয়। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, তারা গণতান্ত্রিকভাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে, এই প্রতিনিধিরা জনগণের কথামতো দেশ চালাবেন—এটিই হলো রাষ্ট্র চালানোর গণতান্ত্রিক পন্থা।
কিন্তু আমি যদি বলি সেনাবাহিনীও গণতান্ত্রিকভাবে চলবে—এটা চলতে পারে না। যদি বলি প্রশাসনও গণতান্ত্রিকভাবে চলবে, এটাও চলতে পারে না। তাদের পারপাসটা আলাদা। রাজনৈতিক দলের পারপাস হলো—ক্ষমতার দ্বন্দ্বে আমরা অন্য পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করি। কাজেই এই প্রতিযোগিতা করতে গেলে আমাকে কতগুলো বিষয় নিজের হাতে রাখতে হয়। যেমন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ জয় করতে হলে কিছু শৃঙ্খলা রাখতে হয়, ক্ষমতা রাখতে হয়, জেনারেলের অর্ডার মানতে হবে—সেটা যতই অযৌক্তিক হোক। আমাদের যেহেতু ক্ষমতার লড়াই করতে হয়, সেখানে রাজনৈতিক দলের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কিছু ধারার দরকার আছে।