রাজনীতিতে সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা

যুগান্তর সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২২, ১১:২৭

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার বিষয়টি উদ্বেগজনক। নির্বাচনকালীন সরকার, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনসহ (ইভিএম) বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এ সংকট নিরসনে দুই দলের মধ্যে আলোচনা বা সংলাপ জরুরি হলেও এর কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছে না; বরং নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সমান্তরালে দল দুটির মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ছে, যা মোটেই কাম্য নয়। এ পরিস্থিতি রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত, তা বলাই বাহুল্য। বলার অপেক্ষা রাখে না, পরিস্থিতির উন্নয়ন না ঘটলে রাজপথ উত্তপ্ত হওয়ার পাশাপাশি রাজধানীসহ সারা দেশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে মানুষের জানমালের ক্ষতি ছাড়াও অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। এ প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা।


অতীতে বিভিন্ন বিষয় ও ক্ষমতার পালাবদলের প্রেক্ষাপটে দেশে সহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি ও মাসের পরপর হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে সহিংসতায় বহু প্রাণহানি ছাড়াও দেশজুড়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে যে ব্যাপক ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদহানি হয়েছিল, এ সবকিছুর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল অর্থনীতিতে। সীমিত সম্পদের এই দেশে আবারও যদি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তাহলে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবে বিপর্যস্ত অর্থনীতি তার ধকল কতটা মোকাবিলা করতে পারবে, এ প্রশ্ন বিবেচনায় নিয়ে মানুষের জানমালসহ অর্থনীতির ক্ষতি এড়াতে রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধের গুরুত্ব আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের অনুধাবন করতে হবে। ভাবতে হবে, আমরা কি শুধু সাংবিধানিকভাবে বৈধ একটি সরকার চাই, নাকি দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই।


ইতঃপূর্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বিরোধী দল, বিশেষ করে বিএনপির সহায়তা চাওয়ার পাশাপাশি এমন নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছিল, যাতে নির্বাচনে সহিংস পরিবেশ সৃষ্টি না হয়। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও সংলাপের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহ্বান ও সবার সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ অবশ্যই ইতিবাচক; তবে নির্দেশটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। বস্তুত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণই শ্রেয়। সমস্যাগুলো যদি আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা যায় এবং সেখানে সমাধানের পথ খোঁজা হয়, তাহলে দেশের রাজনীতিতে সংঘাত, সংঘর্ষ ও নৈরাজ্য হ্রাস পাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটি দেশ শুধুমাত্র রাজনৈতিক হানাহানির কারণে পিছিয়ে থাকবে, তা কারও কাম্য হতে পারে না।


অনেকে মনে করেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যকার সম্পর্ক শত্রুতায় পর্যবসিত হওয়ায় গণতন্ত্র ও দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা দেখছি, গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে বৈরি সম্পর্ক চলছে, তা দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে। দেশে সমঝোতার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হলে এ অবস্থার অবসান ঘটবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিশোধপরায়ণতার রাজনীতি পরিহার করে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও