সমুদ্রগামী জাহাজে বিনিয়োগ বাড়ছে
করোনার দুঃসময়ে বিনিয়োগ হিসেবে সমুদ্রে জাহাজ ভাসিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। করোনা কাটিয়ে অর্থনীতিতে দুঃসময় বইছে। তবু উদ্যোক্তারা সমুদ্রগামী জাহাজ পরিচালনা খাতে নতুন বিনিয়োগ থেকে সরেননি। তাঁদের ধারাবাহিক বিনিয়োগের কারণে স্বাধীনতার পর দেশে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে।
নৌবাণিজ্য কার্যালয়ের হিসাবে, বাংলাদেশের পতাকাবাহী অস্থায়ী-স্থায়ী নিবন্ধিত সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা এখন ৯০টি। স্বাধীনতার পর এ সংখ্যা এখন সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চসংখ্যক জাহাজ ছিল গত বছর। তখন সংখ্যাটি ছিল ৭৩। তৃতীয় সর্বোচ্চ সমুদ্রগামী জাহাজ ছিল ২০১২ ও ২০১৩ সালে। সে সময় ৬৭টি করে জাহাজ ছিল এ তালিকায়।
এ খাতে সামনে নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে। মেঘনা গ্রুপসহ তিনটি গ্রুপের আরও ১০টি জাহাজ আগামী ছয় মাসে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি হলে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা শতক ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উদ্যোক্তারা এমন সময়ে সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন যখন জাহাজভাড়া যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। এতে দুটি লাভ হচ্ছে। প্রথমত, নিজেদের আমদানি পণ্য পরিবহন করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, বিদেশ থেকে পণ্য পরিবহন করে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় হচ্ছে।
তবে সর্বশেষ গত অর্থবছরে এ খাত থেকে কত আয় হয়েছে, সেই হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য পরিবহন বাবদ ৩ হাজার ১১০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। জাহাজের সংখ্যা ও জাহাজভাড়া বাড়ায় গত অর্থবছরে এ আয় আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের বহরে থাকা সমুদ্রগামী জাহাজের সিংহভাগই সুপারম্যাক্স ধরনের। এ ধরনের জাহাজ একসঙ্গে ৫০-৫৫ হাজার টন পণ্য পরিবহন করতে পারে। এর বাইরে রয়েছে ফিডার জাহাজ, যা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে কনটেইনার আনা-নেওয়ার কাজে নিয়োজিত। তেল পরিবহনকারী বড় জাহাজ রয়েছে একটি, যেটি এক লাখ টন জ্বালানি তেল পরিবহন করতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে এলপিজি পরিবহনকারী জাহাজও।