You have reached your daily news limit

Please log in to continue


আধুনিক মন, মনন ও পোশাক-বিতর্ক

আমি যখন অস্ট্রেলিয়ায় আসি, তখন বাইরের দুনিয়া বলতে বুঝি সিনেমায় দেখা রুপালি রঙিন সব মানুষ। এটুকু জানতাম এসব দেশে বালু, কাদা বা ময়লা থাকলেও যত্রতত্র চোখে পড়ে না। পরিপাটি ছবির মতো দেশগুলোর মানুষজনের পোশাক বিষয়ে ধারণা থাকলেও চোখে তো দেখিনি। অভিবাসন নিয়ে আসার পর কাজের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। একটা বিষয় মাথায় ঠিক করা ছিল, ‘অড জব’ নামের কাজগুলো মজুরি আর মানে যা-ই হোক, দীর্ঘ সময় তা করার জন্য থাকব না। তার চেয়ে অনেক ভালো আমাদের স্বদেশ।


কয়েক মাসের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার সামনের সারির একটি ব্যাংকে চাকরি পেয়ে গিয়েছিলাম। উন্নত দেশগুলোতে কে অফিসার আর কে করণিক, এসব কোনো বিষয় নয়। আর করণিক পদগুলোও বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক আগে। আপনি যা-ই হন না কেন, গ্রাহকের ভিড় বাড়লে আসন ছেড়ে এসে তাঁদের মুখোমুখি হতেই হবে। দিতে হবে সেবা বা দরকারি সার্ভিস। যার মানে, মুখোমুখি কথা হবে গ্রাহকের সঙ্গে।

এ কাজ করার জন্য যেসব ট্রেনিং দেওয়া হলো, তার একটি ছিল বেশ মজার। গ্রীষ্মকালে নারীদের পোশাক এখানে স্বল্প বললে ভুল বলা হবে। তাঁরা স্বাধীন দেশের গণতান্ত্রিক নাগরিক। যেমন খুশি, যেমন ইচ্ছে, তেমন পোশাক পরিধান করতেই পারেন। মোটামুটি শালীনতা বলতে আমরা যা বুঝি তার কোনো বালাই নেই এখানে। কিন্তু তাঁরা খুব ভালো জানে কোনটা এবং কতটা দৃশ্যমান হওয়া উচিত। এখন এই ট্রেনিংটা ছিল তাঁদের দিকে তাকানো নিয়ে। পরিষ্কার নির্দেশ ছিল—তুমি তোমার চোখ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। সামনে যা-ই থাকুক তোমার মনোযোগ ও দৃষ্টি থাকবে তাঁর গলা পর্যন্ত। ব্যতিক্রম হতেই পারে। কিন্তু সেখানেই তোমার নজর সীমাবদ্ধ রাখলে তুমি নিরাপদ। তোমার চাকরি টলবে না কোনো অভিযোগ এলেও।

এবার একটু দেশের দিকে চোখ ফেরাই। ঢাকা শহরে টিএসসি প্রাঙ্গণে বহু বছর আগে নববর্ষ উদ্‌যাপনের রাতে বাঁধনকে লাঞ্ছিত করা হয়েছিল যখন, তখন অনেকেই বাঁধনকে দায়ী করেছিলেন এবং বাঁধনের বিরুদ্ধেই সোচ্চার ছিলেন। এযাবৎকালে দেশে যতবার নারী নিগৃহীত, নির্যাতিত, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, ততবার সমাজ নারীকেই দায়ী করেছে।

‘মেয়েটি শার্ট-গেঞ্জি, জিন্‌স পরে ঘুরবে কেন? পুরুষ তো পেছনে লাগবেই। মেয়েটির শাড়ি পরার ঢং উগ্র কেন? পুরুষ তো কথা বলবেই। জামা পরে, ওড়না নেবে না কেন? ছেলেরা তো বুকের দিকে তাকাবেই। মেয়েরা স্কার্ট পরবে কেন? পুরুষ তো শরীরে হাত দেবেই। মেয়েটা দুই পা ফাঁকা করে মোটরসাইকেল চালায়, এ মেয়ের স্বভাব ভালো না। মেয়েটা মাহরাম সঙ্গী ছাড়া একা একা ঘোরে? ছি ছি সতীত্ব নেই নাকি এই মেয়ের!’ যত দোষ নন্দ ঘোষ। কিন্তু নিয়মিত পর্দা-পুসিদার মধ্যে থাকা মেয়েরাও কি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির হাত থেকে বাঁচতে পারেন?

মেয়েরা গলার স্বর উঁচু করে যখন ধর্ষণবিরোধী মিছিলে স্লোগান দেন, যখন রাত জেগে গণজাগরণ মঞ্চ কাঁপিয়ে স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা, তখনো আমার পরিচিত একজন শিক্ষিত মানুষকেই বলতে শুনেছি, ‘মেয়েদের কি এভাবে রাস্তায় নেমে গলা বাড়ানো ধর্মসম্মত?’

খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এই সেদিন নরসিংদী রেলস্টেশনে জিন্‌স ও টপস পরা মেয়েটিকে দেখে একজন নারী বাজে ও নোংরা কথা বলা শুরু করেন। ওই নারীর সঙ্গে যোগ দেয় কিছু বখাটেও। শ্লীলতাহানি করে সেই তরুণীর। পরে ভুক্তভোগী তরুণী নিজেকে বাঁচাতে স্টেশনমাস্টারের রুমে আশ্রয় নেন। স্টেশনমাস্টারের মধ্যস্থতায় ঘটনাটির সুরাহা হয়। ওই তরুণী যে ধরনের পোশাক পরেছিলেন, তা বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই কি না, এ প্রশ্ন তুলে আদালত সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের কৃষ্টি-কালচার অনুযায়ী গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকার কোনো অনুষ্ঠানেও এ ধরনের পোশাক দৃষ্টিকটু।’ তাহলে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আধুনিক পোশাক পরিধান করা কি অনেক বড় অপরাধ? খবরের মূল বিষয়টা এড়িয়ে গেলে ভুল হবে। আধুনিক পোশাক পরিধান কি অপরাধ? এটাই কিন্তু মূল বিষয়। টিপ পরার কথাই যদি ধরেন, বাংলাদেশের নারীরা সেই কবে থেকে কপালে টিপ পরে চলেছেন। আমাদের কৈশোর, যৌবন এমনকি পাকিস্তান আমলেও এ নিয়ে কোনো দিন কেউ কথা বলেনি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন