কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রাজনীতির প্রতি তরুণ প্রজন্মের ঘৃণা কি অহেতুক?

www.ajkerpatrika.com বিভুরঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২২, ১২:৩৩

নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। আমরা প্রায়ই বলি, মানুষের ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু আয় বাড়ছে না। সমস্যার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। সবারই নিজ নিজ অভিজ্ঞতার ভান্ডার এ ব্যাপারে সমৃদ্ধ। সমস্যা সমাধানের উপায় কী, সে বিষয়ে ভাবা দরকার। সমাধানের পথ না দেখিয়ে শুধু সমস্যার কথা বলে আর কারও মনোযোগ আকর্ষণ করা যাচ্ছে না, যাবেও না। তাই আর সমস্যার কথা নয়, বলতে হবে সমাধানের কথা। কেউ কি তা বলছেন?


আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দেশের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে—বিএনপিসহ আওয়ামী লীগবিরোধী সবাই বছরের পর বছর এ কথা বলছে। প্রশ্ন হলো, আওয়ামী লীগ যদি বারোটা বাজিয়েই থাকে তাহলে মানুষ কেন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে না?


এই প্রশ্নেরও গৎবাঁধা উত্তর আছে। সেটা হলো, অত্যাচার-নির্যাতন-মামলা-হামলা চালিয়ে সরকার দেশে ভয়ের সংস্কৃতির বিস্তার ঘটিয়েছে। মানুষ অসহায়-দিশেহারা।


আত্মরক্ষা বা নিজ নিজ সুবিধা অনুযায়ী, কারণে-অকারণে যেসব দেশ থেকে উদাহরণ খুঁজে এনে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা করি, সেই সব দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতির বাস্তবতা সম্পর্কে আমরা অবহিত না হয়েই সচরাচর ওই সব উদাহরণ দিয়ে থাকি। আমরা আমাদের দেশের রাজনীতির ইতিহাস, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি কোন পটভূমিতে স্বাধীন হলো, তারপর নানা সময়ে দেশের অভ্যন্তীরণ রাজনীতির বাঁকবদলের কাহিনিও পুরোপুরি না জেনে-বুঝে নানা রকম মন্তব্য করে সস্তা বাহবা পাওয়ার চেষ্টা করে থাকি।


বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে লিখতে বা বলতে গেলে সবার আগে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পটভূমিটা মনে রাখতে হবে। আমরা অনেক দাম দিয়ে এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। দেশের সব মানুষ পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ রাষ্ট্র হোক—সেটা চায়নি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিঃসন্দেহে গৌরবোজ্জ্বল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে যেমন বেশির ভাগ মানুষ ছিল, তেমনি বিরোধিতা করার মতো মানুষও ছিল। সেটা দেশের ভেতরে ও বাইরেও। পক্ষের শক্তি প্রবল হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ সম্ভব হয়েছে। কিন্তু যারা চায়নি বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক, তারা নিষ্ক্রিয় হয়নি কখনো। দুঃখের বিষয় হলো, ওই বিরোধিতাকারীর সংখ্যা না কমে; বরং দিন দিন বেড়েছে এবং বাড়ছে। কাজেই আমাদের দেশের রাজনীতির একটি দুর্বলতা হলো, বৃহত্তর জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হতে না পারা। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বিদ্বেষ ও বিরোধিতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে।  


দুই. 
জ্বালানি তেল, ইউরিয়া সার, নিত্যপণ্যের দাম ও পরিবহনভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৫ আগস্ট অর্ধদিবস হরতালের ডাক দিয়েছিল বাম গণতান্ত্রিক জোট। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতালের কর্মসূচিতে পথে নামেন জোটের নেতা-কর্মীরা। হরতাল পালনে পুলিশ ও সরকারদলীয় সংগঠন বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করে দলটির নেতারা বলেছেন, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ না হওয়া এবং নিত্যপণ্যের দাম না কমা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দাবি মানা না হলে সামনে অবরোধ, ঘেরাওসহ আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেওয়া হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির জ্বালায় মানুষ অতিষ্ঠ।


কিন্তু তার প্রতিবাদে ডাকা হরতালে কেমন সাড়া পাওয়া গেছে? সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর: হরতালে সকাল থেকেই রাজধানীতে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। রাজধানীর সব সড়কেই দেখা গেছে অফিসগামী যাত্রীদের চাপ। সংখ্যায় কিছুটা কম হলেও গণপরিবহনের পাশাপাশি চলেছে ব্যক্তিগত গাড়িও। পল্টনে কিছুটা যানজট থাকলেও বেলা ১১টার পর থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।


অর্থাৎ দু-একটি পকেট এলাকা ছাড়া হরতালের প্রভাব তেমন লক্ষ করা যায়নি। অথচ বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা হরতালের পর দাবি করেছেন, সাধারণ মানুষ রাস্তায় না নামলেও স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানিয়েছে। প্রশ্ন হলো এই স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের বিষয়টি কীভাবে জানলেন বা বুঝলেন তাঁরা?


এবার দেখা যাক, নতুন প্রজন্মের একজন সচেতন তরুণীর হরতাল নিয়ে প্রতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এভাবে: ‘রাজপথ দখল করে হরতাল করার পদ্ধতিটা আমার ভীষণ অপছন্দের। যে বিষয়ে প্রতিবাদ, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট  দপ্তর-অধিদপ্তরের সামনে গিয়ে অবস্থান করা যেতে পারে, কর্মকর্তাদেরও ঘেরাও করা যেতে পারে। কিন্তু সড়ক অবরোধ করে, খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে, মানুষের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাওয়া বন্ধ করে, হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তির শিকার করে (সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে না পেরে রোগীর মৃত্যু ঘটিয়ে), রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করে—এ কোন ধরনের প্রতিবাদ বুঝি না। অন্যায় উপায়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা তো একটি হাস্যকর বিষয়। কচু পোড়া দিতে অভ্যস্ত বাম দলগুলো (বাংলাদেশের বাম দলগুলোকে আমার কাছে লোকদেখানো উটকো ঝামেলাবাজ বলে মনে হয়) পল্টন, শাহবাগসহ কয়েকটি স্থানে যানবাহন চলাচলে বাধা দিয়ে কী অর্জন করল?’


 হরতাল যে আর আন্দোলনের কার্যকর হাতিয়ার নেই, সেটা বোঝার ক্ষমতা যাদের নেই, তারা কীভাবে রাজনীতির বিকল্প শক্তি হবে, সেটা ভাবার বিষয় বৈকি!

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও