সিন্ডিকেটের বেআইনি বেসামাল মুনাফা
আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট অনৈতিক, বেআইনি ও বেসামাল মুনাফা করে নিজেদের পকেট ভরেছে। জীবন ধারণে চড়া দামে নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে দিশেহারা ভোক্তা। আমদানি পণ্য থেকে শুরু করে দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও বেড়েছে লাগামহীন গতিতে।
সরকারের যথাযথ তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা একচেটিয়া মুনাফা লুটে নিয়েছে। অথচ যে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে, তার প্রভাব এখনই দেশে পড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। এই মুহূর্তে বাজারে যেসব পণ্য আছে, তা অন্তত দু-তিন মাস আগের এলসি করা। অর্থাৎ আগে অপেক্ষাকৃত কমদামে আমদানি করা পণ্যই বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
ভোক্তার ত্রাহি অবস্থা দেখে প্রায় সপ্তাহখানেক পর সরকারের টনক নড়েছে। বিভিন্ন সংস্থার হস্তক্ষেপে ডিম, আটা, সয়াবিন তেল, চিনিসহ বেশকিছু পণ্যের দাম কমেছে। তবে তা যৌক্তিক দামের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। সাতটি নিত্যপণ্যের আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে এসব পণ্যের দাম আন্তর্জাতিকভাবে কমেছে ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ। এর বিপরীতে দেশীয় বাজারে কমেছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়ার কথা নয়। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বাড়তি দামে এলসি খোলার পর সে পণ্যটি দেশে আসতে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগে। রাশিয়া, ইউক্রেন, ব্রাজিল থেকে আসতে আরও বেশি সময় লাগে। আমদানি করা পণ্য সরাসরি প্যাকেজিং করে বাজারে ছাড়লেও ২ থেকে ৪ মাস সময় লাগবে। তবে ভারত ও মায়ানমার থেকে পণ্য এনে সরাসরি বাজারে ছাড়লে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে। এছাড়া যেসব পণ্য কাঁচামাল বা মধ্যবর্তী কাঁচামাল হিসাবে আমদানি হয় সেগুলো বাজারে ছাড়তে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ মাস সময় লেগে যায়।