ইয়াসমিন হত্যার ২৭ বছর
আজ ২৪ আগস্ট, ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি দিবস। ১৯৯৫ সালের আজকের দিনে দিনাজপুরে কয়েকজন বিপথগামী পুলিশের হাতে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয় ১৬ বছরের কিশোরী ইয়াসমিন। তবে ওই ঘটনার প্রতিবাদে দিনাজপুরবাসী যা করেছিল, তাতে কেঁপে গিয়েছিল পুরো বাংলাদেশ। টানা কয়েক দিন পুরো দিনাজপুর জেলা কার্যত অচল করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। কারফিউ-গুলি কোনো কিছুই তাদের দমাতে পারেনি সেদিন। ক্ষোভ সামাল দিতে দিনাজপুর পুলিশ সুপারকে বদলি করা হয়। আরও ১০৫ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সদস্যকেও বদলি করা হয় অন্যান্য জেলায়। অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যকে আটক করে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রবল বিক্ষোভের মুখে পাঁচ দিন পরে ময়নাতদন্ত এবং সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির জন্য ইয়াসমিনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। ময়নাতদন্তের পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বিচারের মাধ্যমে তারা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। ঘটনার ৯ বছর পর ২০০৪ সালে সেই পুলিশ সদস্যকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
কিন্তু আলোচিত সেই অপরাধ আর দৃষ্টান্তমূলক সেই শাস্তির পরও থেমে নেই নারীর প্রতি সহিংসতা; বরং ইদানীং তা বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলা নিষ্পতিতে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়া ও সঠিক বিচার না হওয়ায় ধর্ষণ ও নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। সূত্র জানিয়েছে, দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সাড়ে ৪ হাজারের অধিক মামলা আটকে আছে। গত ৮ মাসে আদালতে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা হয়েছে ৮৭১টি। আর ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই আদালতে মামলা হয় ১ হাজার ২৭৬টি।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তৈয়বা বেগম বলেন, বর্তমানে আদালতে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি নারী ও নির্যাতন মামলা জট রয়েছে। মূলত মামলার সাক্ষীরা সঠিক সময়ে উপস্থিত হন না। তাই মামলাগুলোর কার্যক্রম বেশি দিন ধরে চলছে। মামলার সাক্ষীদের সঠিক সময়ে উপস্থিত করা গেলে মামলার সংখ্যা অনেকটা কমে আসবে। তবে এর পেছনে আরও অনেক কারণ আছে বলে মনে করেন এই আইনজীবী।