১৫ আগস্ট: আসল সত্য জানা জরুরি

প্রথম আলো মহিউদ্দিন আহমদ প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২২, ১৪:৪১

আগস্ট আমাদের শোকের মাস। ১৫ আগস্ট এক অভ্যুত্থানে আমরা হারিয়েছি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এটা অভূতপূর্ব, অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিয়োগান্ত। আমরা আগে ছিলাম পাকিস্তানি। এখন বাংলাদেশি। আমাদের পাকিস্তানবিরোধী রাজনৈতিক মনস্তত্ত্বে আছে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও দ্রোহ। পাকিস্তানে নিয়মিত বিরতিতে জারি হয় কোটালের রাজ। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশেও এ রকম দেখেছি তিনবার। ১৯৭৫, ১৯৮২ ও ২০০৭ সালে। এই সব কটির মধ্যে ব্যতিক্রম হলো ১৯৭৫। অন্য সব অভ্যুত্থান ছিল ‘রক্তপাতহীন’। ১৯৭৫ ছিল রক্তাক্ত। কেন এমন হলো?


১৫ আগস্ট রাজনীতির চালচিত্র পাল্টে গিয়েছিল। এই পালাবদলের দুটি উপাদান আছে। একটি হলো অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন। পরিবর্তন করতে গিয়ে সরকারপ্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারা খুন হন। কঙ্গোর প্যাট্রিস লুমুম্বা আর চিলির সালভাদর আয়েন্দের কথা আমরা জানি। এটা আকছার হচ্ছে নানা দেশে। কিন্তু দ্বিতীয় উপাদানটি ব্যতিক্রমী। খুব কম দেশেই এ রকম হয়। আমাদের দেশে শুধু সরকারপ্রধান বা তাঁর রাজনৈতিক সহযোগীরা নন, খুন হয়েছেন নারী-শিশুসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। এখানে একটি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এই দ্বিতীয় উপাদানটি সচরাচর দেখা যায় না। এমনটি হয়েছিল রুশ বিপ্লবের সময় আর ইরাকে সামরিক চক্রের ক্ষমতা দখলের সময়। পরিবারের কাউকে আর জীবিত রাখেনি বিপ্লবীরা বা অভ্যুত্থানকারীরা। বাংলাদেশে সহিংসতার মাত্রা এত ছিল যে হত্যাকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য জারি করা হয়েছিল ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। অবশ্য এ থেকেও আমরা শিখি না। এর আগে-পরে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে রক্ষী বাহিনীকে, অপারেশন ক্লিন হার্টে। র‍্যাবের কথাও শুনি। আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত নই।


১৫ আগস্ট নিয়ে অনেক কাটাছেঁড়া হচ্ছে। আরও হবে। ৪৭ বছর হয়ে গেল। অনেক কিছুই জানা গেল না। বলা হয়ে থাকে, এটা শুধু ‘কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার’ কাজ নয়, এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। সেই ষড়যন্ত্রটি আজও উন্মোচন করা গেল না। এ নিয়ে একটি কমিশন গঠনের কথা আজকাল বেশ জোরেশোরেই শোনা যায়। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব আমিও দিয়েছিলাম ২০১৪ সালে, একটি উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে। আমি এমনও বলেছি, যেকোনো কারণেই হোক, সরকার প্যান্ডোরার বাক্সের ডালা খুলতে চায় না। সরকারের শীর্ষ মহল থেকে নাম ধরে ধরে ষড়যন্ত্রকারীর পরিচয় জানানো হচ্ছে। এটা যদি জানাই থাকে, তাহলে কমিশন বানিয়ে লাভ কী? একটা শ্বেতপত্র–জাতীয় কিছু দিয়ে দিলেই হয়।


১৫ আগস্ট নিয়ে হাতের কাছে আছে দুটি বই, লরেন্স লিফশুলৎজের দ্য আনফিনিশড রেভল্যুশন আর অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের দ্য লিগ্যাসি অব ব্লাড। দুটো বইকে অভ্রান্ত ধরে নিয়ে মন্তব্য করতে থাকলে তো আর অনুসন্ধানের দরকার পড়ে না। ১৫ আগস্ট ও তার পরপর আমরা দেখেছি কয়েকজন মেজর-ক্যাপ্টেন বঙ্গভবনে বসে ছড়ি ঘোরাত। তাদের নেতা ছিলেন রশিদ আর ফারুক। মসনদে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদ। তাঁর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হন জেনারেল (অব.) এম এ জি ওসমানী। তাঁর নিচেই ছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ মেজর জেনারেল খলিলুর রহমান। এটা অনুমিতই ছিল যে মেজর জেনারেল সফিউল্লাহকে সরিয়ে নতুন একজনকে সেনাপ্রধান করা হবে। এটি করতে ৯ দিন লেগে গেল। সেনাপ্রধান হিসেবে মোশতাক, ওসমানী, রশিদ ও ফারুকের প্রথম পছন্দ ছিলেন খালেদ মোশাররফ। ওসমানী জিয়াউর রহমানকে খুব অপছন্দ করতেন। কিন্তু অভ্যুত্থানকারীদের বেশির ভাগের পছন্দ হিসেবে জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করা হয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ তো দুগ্ধপোষ্য শিশু নন। তিনি জানতেন, তাঁকে সরে যেতে হবে। তিনি কেন ১৫ আগস্টের পরপর পদত্যাগ করলেন না। তাহলে তো তিনি বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকতেন। তাঁর কি একটি চাকরির এতই দরকার ছিল?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও