বিআরটির কাজ শুরুর পর ৯ বছরে ঝরেছে ১১ প্রাণ
যানজট নিরসনে গাজীপুর থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ করছে সরকার। কিন্তু ২০১২ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরুর পর নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন অবহেলাজনিত দিক সামনে এসেছে। সম্প্রতি এই প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনা গোটা দেশকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে।
বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য রোড রোববার (২১ আগস্ট) এক জরিপ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরুর পর থেকে গত ৯ বছরে সেখানে ১১ প্রাণ ঝরেছে, আহত হয়েছেন ২৭৮ জন। জরিপ অনুসারে, ২০১৬ সালে শুরু হওয়া মেট্রোরেল প্রকল্পে প্রাণ ঝরেছে ৩ জনের। আহত হয়েছেন ৮৬ জন। সেভ দ্য রোডের চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী ও মহাসচিব শান্তা ফারজানার পাঠানো এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআরটি প্রকল্পের সীমাহীন অব্যবস্থাপনা আর ঠিকাদারদের দায়িত্বে অবহেলা, প্রজেক্ট কর্তাদের অদক্ষতায় ২৯ হাজার ৫১২ কর্মঘণ্টা অপচয় হয়েছে, পাশাপাশি সবচয়ে নির্মম হলেও সত্য অ্যাম্বুলেন্সে থাকা মুমূর্ষ রোগীদের মধ্য থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পথে যানজটেই প্রাণ হারিয়েছেন ১২৬।
এই নয় বছরে অসহনীয় দূষণের কারণে অসুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৫৬২ জন। মেট্রোরেল প্রজেক্টের কারণে ১১ হাজার ৮৬০ কর্মঘণ্টা অপচয়ের পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ৫৪ রোগী দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কারণে অসুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৫৬২ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিআরটি প্রকল্পটি ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও মূলত কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে সুচারুরূপে চলতি বছরের মধ্যে শেষ না করা হয় তাহলে আগামী বছর বিআরটির সঙ্গে সঙ্গে মেট্রোরেল প্রজেক্টটি হবে ব্যস্ততম ঢাকায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। সেভ দ্য রোডের প্রতিবেদনে মেট্রোরেল ও বিআরটি প্রকল্প চলাকালে এয়ারপোর্ট, উত্তরা, রামপুরা, বাড্ডা, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, শাহবাগ, মহাখালী, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, শ্যামলী, গাবতলী, সাতরাস্তা মোড়, মগবাজার, গুলিস্তান, পুরান ঢাকা, নিউ মার্কেট, সায়েদাবাদ যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক সতকর্তার জন্য নিয়োগের দাবি জানানো হয়।