তেলের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং ও ভর্তুকির কথা

প্রথম আলো অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২২, ১৬:০৫

সারা দেশে এখন বিপুল বিক্রমে লোডশেডিং চলছে। আসলে এর ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে আগেই এবং বহু অঞ্চল আগে থেকেই এ সমস্যায় ভুগছিল। আমি রাজধানী শহরে থাকি। শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি উচ্ছ্বাসে হাতিরঝিলে যেদিন আতশবাজি উৎসব হলো, দূর থেকেও তা আমার চোখে এসে পড়েছে। কারণ, আমাদের বাসায় তখন বিদ্যুৎ ছিল না। শতভাগ কেন, সরকারের দাবি অনুযায়ী, চাহিদার তুলনায় দুই শত ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার হিসাবের মধ্যেও এ রকম দিন বাসায় আমি কমই পেয়েছি, যেদিন কমপক্ষে দু–তিনবার বিদ্যুৎ যায়নি। ঢাকার বাইরে বহু জায়গায় পরিস্থিতি আরও খারাপ ছিল। এগুলো তখন সংবাদমাধ্যমে আসেনি, সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এখন এর ব্যাপকতা বাড়ায় সরকারও তার ‘অস্বীকারের স্বভাব’ রক্ষা করতে পারছে না। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে শুরু হয়েছে দেশব্যাপী লোডশেডিং।


সরকারের লোকজন বিদ্যুৎ–সংকটের জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কারণ হিসেবে উপস্থাপন করছেন। এটা ঠিক যে এর কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-এলএনজির দাম বাড়ছে, জোগানব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। কিন্তু এর কারণে যে আমরা বিপদে পড়ছি, তা কি অনিবার্য ছিল? বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তেল–এলএনজি আমদানি করতেই হবে আমাদের? আর কোনো বিকল্প নেই, ছিল না? জি ছিল। আসলে বর্তমান বিদ্যুৎ–সংকট, বিদ্যুৎ খাতে ক্রমবর্ধমান হারে ভর্তুকি, ঋণনির্ভরতা, রামপাল, রূপপুরসহ বিদ্যুতের নামে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি ও দেশের জন্য বিপজ্জনক প্রকল্প গ্রহণ এ সবকিছুই এই খাত নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা ও এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রণীত দায়মুক্তি আইনের ফলাফল।


জাপান প্রণীত সরকারের এই মহাপরিকল্পনায় নিজেদের গ্যাস উত্তোলনে কোনো উদ্যোগ না নিয়ে ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি, কয়লা ও পারমাণবিক প্রকল্প গ্রহণের পথ তৈরি করা হয়েছে। সর্বোপরি জ্বালানি সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সক্ষমতার বিষয়টি পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। এদিকে রেন্টাল, কুইক রেন্টালসহ এসব অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, দুর্নীতি রক্ষায় বারবার দায়মুক্তি আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এভাবে গৃহীত সব প্রকল্প দেশি কিছু গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন বিদেশি কোম্পানির জন্য উচ্চ লাভজনক হলেও দেশের জন্য আর্থিক ও পরিবেশগত মহাবিপদ তৈরি করেছে।


এর বিপরীতে আমরা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে যে মহাপরিকল্পনা (২০১৭-২০৪১) প্রস্তাব করেছিলাম, তাতে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল জ্বালানি সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সক্ষমতার ওপর। একদিকে নিজেদের গ্যাস, অন্যদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি—এই দুইয়ের মিশ্রণে ২০২১-২০৩১-২০৪১ তিন পর্বে ক্রমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরির প্রস্তার ছিল আমাদের। এতে কোনো ঋণনির্ভরতা, আমদানি বা নির্ভরশীলতা দরকার হতো না, বিদ্যুতের জন্য সুন্দরবন বিনাশ, কয়লা বা পারমাণবিক মহাবিপদের দরকার হতো না। জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় দেশের শিক্ষাজগৎও নতুন মাত্রায় যেতে পারত, বিদ্যুতের দামও ক্রমে কমে আসত। কিন্তু দেশি–বিদেশি স্বার্থান্বেষী চক্র এই পথে যেতে রাজি হয়নি। কারণ, এতে অতি মুনাফা নেই, বড় কমিশন নেই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও