এক বছরে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বেড়েছে আফগানিস্তানে
একবছর আগে লিমার জীবন সুন্দর ছিল। আইন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়া ২৭ বছর বয়সী লিমার রাজধানী কাবুলে একটি চাকরি ছিল। তিনি তার অবসর সময়ে একটি স্থানীয় জিমেও কাজ করেছেন। কিন্তু গত বছর সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে, নারীদের অনেক কাজ থেকে, এমনকি পুরুষ সঙ্গী ছাড়া ভ্রমণ করা এবং তাদের খেয়াল খুশি মতো পোশাক পরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
লিমা তার চাকরি হারিয়েছেন। তার পরিবারে বাবা-মা, ভাইবোনসহ ১৩ জন সদস্য রয়েছেন। তার হবু বরও চাকরি খুয়েছেন। তার ভাইয়ের ব্যবসা ভেস্তে গেছে। তিনি একা রাস্তায় চলতে পারেন না। জিম যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। রাজধানীর উত্তরে বাঘলান প্রদেশে মাহমুদ নামে একজন তরমুজ চাষির বাড়িতে কিছু একটা খোঁজা হচ্ছে। তালেবান ক্ষমতাগ্রহণের কিছুক্ষণ আগে, তার বাড়িটি সরকারি বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হয়। তারা ভেবেছিল এটি একটি জঙ্গি আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা তার বাড়িতে তল্লাশি চালায়। মাহমুদ তার পরিবারকে ভবনের পেছনে নিরাপদে নিয়ে যান।
কৃষকদের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়াটা অস্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে সেগুলো আর নেই। এটা সত্য, যে অতিবৃষ্টি মাহমুদের ফসল নষ্ট করেছে, তার আত্মীয়রা তাদের চাকরি হারিয়েছে এবং তার পরিবার আর্থিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তবে অন্তত তার সন্তানকে গুলিবিদ্ধ হওয়া নিয়ে তাকে আর চিন্তা করতে হয় না। তাছাড়া দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও তার গ্রামে এসে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। গতবছর ১৫ আগস্ট কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘটনা বজ্রপাতের মতো আঘাত করে সেখানকার মানুষকে। তালেবানের সহজ জয় সবাইকে অবাক করেছে, এমনকি যোদ্ধাদেরও। আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করায় হতাশ আফগান দোভাষীরা পালিয়ে যাওয়ার আশায় বিমানবন্দরে ভিড় জমায়। সেই আতঙ্ক আর উদ্বেগ গোটা বিশ্ববাসী দেখেছে। এরপর তালেবান দ্রুত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। পরে ক্রামগতভাবে দেশটি ভয়াবহ সংকটের মধ্যে পড়ে। আফগানিস্তানের মূল সমস্যা অর্থনৈতিক সংকট।