শিশুর হার্টের রোগ কাওয়াসাকি ডিজিজ
শিশুদের হার্টের যত রোগ আছে, সেগুলোর বেশির ভাগই জন্মগত ত্রুটি। এর বাইরে আমাদের দেশে শিশুদের হার্টের সমস্যার অন্যতম কারণ দুটি। একটি হলো বাতজ্বরজনিত; যা ইতিমধ্যে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আরেকটি হলো কাওয়াসাকি ডিজিজ।
ষাটের দশকে ডা. তমিসাকু কাওয়াসাকি প্রথম এ রোগ জাপানে শনাক্ত করেন এবং তাঁর নামেই রোগের নামকরণ করা হয়েছে। এটি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মধ্যে বেশি হয়ে থাকে। এ রোগ আমাদের দেশে অনেক বেশি না হলেও মাঝেমধ্যে ধরা পড়ে। তবে সচরাচর এ রোগ নিয়ে আলোচনা কম হয়।
সময়মতো এ রোগ নির্ণয় বা এর চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত শিশুর হার্টের নানা সমস্যা, বিশেষ করে হার্টে রক্ত চলাচলে নিয়োজিত করোনারি রক্তনালিসমূহে প্রদাহ হয়ে জটিলতা হতে পারে।
কেন হয়, কী হয়
কী কারণে কাওয়াসাকি ডিজিজ হয়, তা আজও জানা যায়নি। তবে এ রোগে আক্রান্ত শিশুর মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে শরীরের রক্তনালিগুলো প্রদাহের শিকার হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয় হৃৎপিণ্ডের করোনারি রক্তনালি; যা আগেভাগে নিশ্চিত করে চিকিৎসা না করালে আক্রান্ত রক্তনালিগুলোর প্রাচীর দুর্বল হয়ে প্রসারিত হয়ে যায়, হৃৎপিণ্ডের রক্তপ্রবাহে বিঘ্ন তৈরি হয়ে রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধা উৎসাহিত করে ও পরে হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক পরিণতির সৃষ্টি করে।
লক্ষণ ও রোগনির্ণয়
প্রধান উপসর্গ উচ্চমাত্রার জ্বর; যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। জ্বরের কারণ বের করার জন্য সচরাচর যেসব পরীক্ষা করা হয়ে থাকে, তাতে কিছুই ধরা পড়ে না। এ রোগ নির্ণয় করার জন্য বিশেষ কোনো পরীক্ষা নেই। শনাক্ত করার জন্য জ্বরের সঙ্গে আক্রান্ত শিশুর শরীরে নিচের পাঁচটি লক্ষণের উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ।
- পিচুটি ছাড়া দুই চোখ রক্তবর্ণ হয়ে যাওয়া।
- মুখগহ্বর ও জিব লাল হয়ে যাওয়া, ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া।
- হাত ও পায়ের পাতা লালচে হয়ে পানি জমা।
- শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাল ছোপ ছোপ র্যাশ বের হওয়া।
- ঘাড়ের এক পাশের লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া।