বৈদেশিক লেনদেনে বিকল্প মুদ্রা ব্যবহারের উদ্যোগ

যুগান্তর প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২২, ০৯:৪১

তীব্র সংকটের কারণে ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। ফলে কমছে টাকার মানও। ডলারের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ায় আমদানি ব্যয়ও বাড়ছে। বাড়তি দামে পণ্য আমদানি করায় বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ। সঙ্গে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির চাপ। সামগ্রিকভাবে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মানুষের জীবনযাত্রায়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকার ডলারের বিকল্প হিসাবে বৈদেশিক লেনদেনে অন্য মুদ্রা ব্যবহারের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত পরীক্ষা করে দেখছে। ইতোমধ্যে বিকল্প মুদ্রা হিসাবে ইউরোর ব্যবহার শুরু হয়েছে। এ তালিকায় আরও রয়েছে ভারতীয় মুদ্রা রুপি, চীনের মুদ্রা আরএমবি এবং রাশিয়ার মুদ্রা রুবল।


সূত্র জানায়, বর্তমানে বৈদেশিক লেনদেনের জন্য ডলার, ইউরো, রুপি এবং আরএমবির ব্যবহার অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রাশিয়ার মুদ্রা রুবল অনুমোদনের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যায়ে আছে।


শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা জানান, বাংলাদেশ আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় আমদানিতে বিকল্প মুদ্রা ব্যবহার করলে সুবিধা পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ মোট আমদানির ৪০ শতাংশই করে ভারত ও চীন থেকে। ডলারের বিপরীতে এ দুই মুদ্রার মানও টাকার চেয়ে বেশি কমেছে। ফলে ওই দুই দেশ থেকে নিজস্ব মুদ্রায় আমদানি করলে বেশি সাশ্রয় হবে। এক্ষেত্রে রুপি ও আরএমবির জোগান বাড়াতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। রিজার্ভের একটি অংশ ওই মুদ্রায় রাখতে হবে।


প্রসঙ্গত, গত এক বছরের ব্যবধানে দেশে ডলারের দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মুদ্রার বিপরীতেও ডলারের দাম বেড়েছে। ফলে ডলারে এলসি করে পণ্য আমদানি করলে দাম বেশি পড়ছে। তবে ডলারের পরিবর্তে অন্য মুদ্রায় পণ্য আমদানি করলে ব্যয় কম হবে। এতে বৈদেশিক লেনদেনে সাশ্রয় হবে। এ কারণে ডলারের পরিবর্তে অন্য মুদ্রায় লেনদেনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।


ভারতের বৈদেশিক লেনদেনের প্রধান মুদ্রা ডলার। কিন্তু দেশটি জাপানের সঙ্গে দুই দেশের নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন সম্পন্ন করছে। এতে বছর শেষে যে লেনদেন বকেয়া থাকছে, পরের বছর তা সমন্বয় করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়াও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন করছে। চীন তাদের মুদ্রায় অনেক দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য করছে। বাংলাদেশের সঙ্গেও নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন করার কাঠামো তৈরি করেছে ঢাকা-বেইজিং। পাকিস্তানের সঙ্গেও করছে। রাশিয়া তাদের নিজস্ব মুদ্রায় চীন, ভারতসহ অনেক দেশের সঙ্গে লেনদেন করছে। এর মাধ্যমে ডলারের উত্তাপ থেকে তাদের অর্থনীতিকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এখন যেহেতু ডলার বিশ্বব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, এই অবস্থায় ডলারের বিকল্প হিসাবে অন্য মুদ্রা ব্যবহার করলে ডলারের উত্তাপ থেকে অর্থনীতি কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। এ প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর যুগান্তরকে বলেন, ডলারের বিকল্প হিসাবে এখন অন্য মুদ্রা ব্যবহার করলে অর্থনীতিতে অনেক সাশ্রয় হবে। ইউরোর দাম এখন কম। এর মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলোয় আমদানি-রপ্তানি করা যেতে পারে। পাউন্ডের দামও কমেছে। এর মাধ্যমেও ইউরোপের দেশগুলোয় লেনদেন করা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, বিকল্প অনেক পথ খোলা রাখতে হবে। যখন যেটি সুবিধা, সেটি ব্যবহার করতে হবে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককেই প্রধান ভূমিকা নিতে হবে। তিনি মনে করেন, বিকল্প মুদ্রাগুলোর রিজার্ভ থাকতে হবে। উদ্যোক্তাদের সুবিধার বিষয়টি বোঝাতে হবে। তাহলে সুফল মিলবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও