সাকিব, আর কত?
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বলতে গেলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই নেই তাঁর। রেকর্ড বইয়ের পাতায় পাতায় খচিত এই নাম। ব্যাটিং-বোলিংয়ের বাইরে আরেকটি ’রেকর্ড’ও মনে হয় সাকিব আল হাসান অনেক আগেই করে ফেলেছেন। বিতর্কের রেকর্ড!
যার সর্বশেষ পর্বটি মঞ্চস্থ হচ্ছে এখন। যে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে বেটিং এবং ক্রিকেট–জুয়া। সপ্তাহখানেক আগেও যে ‘বেটউইনার’ নামটা বাংলাদেশে অপরিচিত ছিল, সাকিবের কল্যাণে তা এখন প্রায় সবারই জানা। এটাও মনে হয়, এখন আর কারও অজানা নেই যে এই বেটউইনার বেটিং আর ক্যাসিনোর ওয়েবসাইট। বাংলাদেশে বেটিং নিষিদ্ধ, অথচ এই বেটিং ওয়েবসাইটেরই শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তি করে নিজের ফেসবুক পেজে তা ঘোষণা করে দিয়েছেন সাকিব।
একটা ফাঁক অবশ্য ছিল। সাকিব শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন বেটউইনার নিউজ নামে একটা ওয়েবসাইটের, যারা নিজেদের খেলার খবরের ওয়েবসাইট হিসেবে দাবি করে। সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র ওয়েবসাইট, যেটিতে ঢুকলেই আপনি দেখবেন, সেখানে লাল হরফে লেখা—বেটিংয়ের সঙ্গে এই ওয়েবসাইটের কোনো সম্পর্ক নেই। যা দেখে ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না’ প্রবাদটা মনে পড়ে যেতে বাধ্য।
যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে ক্রিকেটারদের বিসিবি থেকে অনুমতি নেওয়াটা বাধ্যতামূলক। সাকিব সেটির কোনো তোয়াক্কাই করেননি। কারণ, তিনি জানতেন, বিসিবি কখনোই এটি অনুমোদন করবে না। এমন শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজ সাকিব অতীতেও করেছেন। একাধিকবার নিষিদ্ধ হয়েছেন, কখনোবা পার পেয়ে গেছেন। এবারও হয়তো দ্বিতীয়টাই হবে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু বিসিবি শুরু থেকেই এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়। তবে এটাও ঠিক, কঠোর না হয়ে বিসিবির উপায়ও ছিল না। বিসিবি বলুন বা আইসিসি অথবা বাংলাদেশের আইন—সবকিছুতেই কোনো ক্রিকেটারের বেটিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রশ্ন হচ্ছে, সাকিব কি জানতেন না?