
‘টার্গেট কিলিংয়ের’ শিকার রোহিঙ্গা নেতারা
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়েছে অপরাধ কর্মকাণ্ড। গত চার মাসে রোহিঙ্গা নেতাসহ ১২ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ডে মিয়ানমারভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ রোহিঙ্গা নেতাদের।
তবে ক্যাম্পে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার কার্যক্রম নেই। অপহরণ, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মাঝেমধ্যে অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে। সেইসঙ্গে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) উখিয়ার জামতলি ১৫ নম্বর ক্যাম্পের সি-৯ ব্লকের পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের প্রধান মাঝি আবু তালেব (৪০) এবং সাব-ব্লকের মাঝি সৈয়দ হোসেনকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বজনদের দাবি, আরসার সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। ক্যাম্পে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করায় এবং অপরাধীদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেওয়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তারা। এ ঘটনায় আতঙ্কে আছেন স্বজনরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সরকারি এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক দল দায়িত্ব পালনের পর থেকে মাঝিরা টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাঝেমধ্যে রোহিঙ্গা নেতারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থাকে অপরাধীদের তথ্য সরবরাহের কারণেও হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পাশাপাশি নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।’
আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের তথ্যমতে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে গত চার মাসে ১২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ৯ আগস্ট দুই রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। ৮ আগস্ট টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মো. ইব্রাহীম (৩০) নামে এক রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। ১ আগস্ট একই ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন হাবিব উল্লাহ (২০) নামে এক রোহিঙ্গা। ৪ আগস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ১ আগস্ট বিকালে উখিয়ার মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নুরুল আমিন (২৬) নামে এক রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।