গরিবের আটায় চাকুরের থাবা
আগের কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমের তুলনায় গতকাল বুধবার সকালের আবহাওয়া ছিল বেশ মনোরম। নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীতেও ছিল বাতাসের ঝাপটা। বাতাসের বেগ সামাল দিতে এক হাতে মাথার ঘোমটা টেনে ধরেছিলেন পাপিয়া সুলতানা। অন্য হাতে ধরা ছিল বাজারের খালি ব্যাগ। সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর পান্থপথে দাঁড়িয়ে ইতি-উতি তাকাচ্ছিলেন তিনি। পাশের ফল বিক্রেতার কাছে জানতে চাইলেন ওএমএসের চাল-আটা নিয়ে ট্রাক কখন আসবে। ফল বিক্রেতার ভাবলেশহীন উত্তর আরও ঘণ্টা দুই পরে আসেন।
পাপিয়া গেলেন না। ফুটপাতেই বাজারের ব্যাগ বিছিয়ে বসে পড়লেন। আরামদায়ক বাতাসের মধ্যেও তার কপালে ছিল ঘাম। প্রায় শেষ শ্রাবণের আকাশের দিকে তাকিয়ে যেন মেঘের মধ্যে স্বস্তি খুঁজছিলেন।
পাপিয়া এই প্রতিবেদককে জানালেন, ওএমএসের ট্রাক থেকে আটা কিনতে চান। জীবনে কোনোদিন ওএমএসের লাইনে দাঁড়াননি। কিন্তু এবার আর পারলেন না। বাজারে যে আটা ৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সেটাই ওএমএসের ট্রাকে বিক্রি হয় ১৭ টাকায়। প্রতিবেশীর কাছে এ গল্প শুনে সকাল সকালই ব্যাগ নিয়ে চলে এসেছেন পান্থপথ মসজিদের সামনে যেখানে ট্রাকটি দাঁড়ায়। খুব বেশি আটা থাকে না ট্রাকে। যেটুকু থাকে সেটাও তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে যায় প্রতিবেশীর এ সতর্কবার্তার কারণেই আগেভাগেই চলে এসেছেন খাদ্য অধিদপ্তরের ট্রাক সেল কেন্দ্রে।