গ্যাস পুড়িয়ে ‘ওয়াসার শরবত’ খাওয়া আর কত

প্রথম আলো কাজী আলিম-উজ-জামান প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২২, ১৫:৩৫

নগরবাসীকে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহের বিধিবদ্ধ সংস্থার নাম ওয়াসা। তারা নদী ও গভীর নলকূপ থেকে আহরণ করা পানি যথাযোগ্য উপায়ে পরিশোধনের পর সরাসরি খাওয়ার উপযোগী করে নগরবাসীর কাছে পৌঁছে দেবে, এটা তাদের দায়িত্ব। কিন্তু এই ওয়াসার পানি কেউ সরাসরি পান করে না। যারা করে, তারা বাধ্য হয়ে করে, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় করে। আগারগাঁও বস্তির বাসিন্দা সেলিম ও তাঁর স্ত্রী রোকেয়া কীভাবে ওয়াসার পানি ফুটিয়ে খাবেন? তাঁদের ছয় পরিবারের জন্য রান্নার চুলা তো দুটি। ফুটিয়ে পান করার মতো ‘বিলাসিতা’ ও সময় তাঁদের কোথায়? সেলিম-রোকেয়াদের মতো হাজারো মানুষ এ শহরে আছে, সরাসরি ওয়াসার পানি খেয়ে পেটের পীড়া যাদের নিত্যসহচর।


জ্বালানিসংকটের এই বুভুক্ষু সময়ে ঢাকার বেশির ভাগ পরিবারেই চড়া মূল্য দিয়ে কেনা গ্যাস পুড়িয়ে ওয়াসার পানি ফুটিয়ে তারপর পান করা হয়। কেউ কেউ আছেন, যাঁরা ফুটানো পানি পুনরায় ফিল্টার করে নেন। প্রশ্ন হলো, কেন সরকারি সেবা সংস্থার সরবরাহ করা পানি সরাসরি পান করা যাবে না? কেন এ জন্য আবার গ্যাস পোড়াতে হবে? বিষয়টি একেবারেই মালুম হয় না।


পরিসংখ্যান হাজির করা যাক। ঢাকা ওয়াসার অনিয়ম-দুর্নীতি ও গ্রাহকসেবার বিভিন্ন ঘাটতির দিক নিয়ে ২০১৯ সালে ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তাতে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসা পাইপলাইনের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহে ব্যর্থ। ৯১ শতাংশ গ্রাহক পানি ফুটিয়ে পান করেন। পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে বছরে ৩২২ কোটি টাকার গ্যাস খরচ হয়। অর্থাৎ ওয়াসা যদি পানের উপযোগী পানি সরবরাহ করত, তাহলে এত বিপুল অর্থের গ্যাস সাশ্রয় হতে পারত।


ইতিমধ্যে ভোক্তাপর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বাসার রান্নায় ব্যবহৃত দুই চুলায় মাসে ১ হাজার ৮০ টাকা ও এক চুলায় দিতে হচ্ছে ৯৯০ টাকা। আর প্রিপেইড মিটারের গ্রাহক প্রতি ইউনিটে (ঘনমিটার) দিচ্ছেন ১৮ টাকা, তাঁদের খরচ বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। জুন মাস থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, গ্যাসের দাম নাকি আরও বাড়বে। জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পর গ্যাস আর বাদ থাকে কেন! এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, ওয়াসার পানি ফোটানো বাবদ জনগণের পকেট থেকে বেরিয়ে যাবে আরও বিপুল অঙ্কের টাকা, পুড়বে আরও বিপুল পরিমাণ গ্যাসসম্পদ।


ঢাকা ওয়াসার ক্ষমতাধর এমডি, যিনি ২০০৯ সাল থেকেই এই পদে নটআউট আছেন, একবার দাবি করেছিলেন, তাঁদের সরবরাহ করা পানি সরাসরি পানযোগ্য। এরপর ঢাকার জুরাইন থেকে সমাজকর্মী মিজানুর রহমান ওয়াসার পানি নিয়ে গিয়েছিলেন কারওয়ান বাজারে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে এমডিকে শরবত বানিতে খাওয়াতে। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও মেহমানকে নিজের ঘরে ডেকে নেননি মান্যবর এমডি; বরং দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন। ঘটনাটি ওই সময় নগরবাসীকে নাড়া দিয়েছিল; যদিও তাতে কোনো ফল হয়নি। অবশ্য গত ৫ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নগরবাসীর চাহিদা-ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা’ শীর্ষক এক সংলাপে এমডি ভুল স্বীকার করে নেন। তিনি কবুল করেন, তাঁর বাসার পানিতেও দুর্গন্ধ থাকে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও