গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু আম্পায়ার রুডি কোয়ের্তজেনের
আইসিসির সাবেক এলিট প্যানেল আম্পায়ার দক্ষিণ আফ্রিকান রুডি কোয়ের্তজেন মৃত্যু বরণ করেছেন। ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানাচ্ছে, গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। কেপ টাউন থেকে নিজেই গাড়ি চালিয়ে ইস্টার্ন কেপ-এ যাচ্ছিলেন রুডি কোয়ের্তজেন। সেখানেই তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। পথেই দুর্ঘটনার শিকার হলেন তিনি।
রুডি কোয়ের্তজেন হচ্ছেন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ পরিচালনাকারী আম্পায়ার। মোট ৩৩১টি ম্যাচ আম্পায়ার হিসেবে পরিচালনা করেন তিনি। ২০১০ সালে কোয়ের্তজেন যখন অবসর গ্রহণ করেন, তখন তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ ম্যাচ পরিচালনাকারী আম্পায়ার। এরপর পাকিস্তানের আলিম দার তাকে ছাড়িয়ে যান। আলিম দার এখনও আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করছেন এবং এখনও পর্যন্ত মোট ৪২০টি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। শুধু সর্বোচ্চ ম্যাচ পরিচালনা করাই নয়- রুডি কোয়ের্তজেন, আলিম দার এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্টিভ বাকনর- মাত্র এই তিন আম্পায়ারই ১০০’র বেশি টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করার গৌরব অর্জন করেন। রুডি কোয়ের্তজেনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে আলিম দার বলেন, ‘এই মৃত্যু সর্বপ্রথম তার পরিবার, এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় একটি ক্ষতি এবং মর্মবেদনার সংবাদ।
আমি অনেকগুলো ম্যাচেই তার সঙ্গে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করতে দাঁড়িয়েছি। তিনি শুধু একজন দুর্দান্ত আম্পায়ার ছিলেন না, ছিলেন একজন অসাধারণ সহকর্মী। মাঠের মধ্যে ছিলেন সব সময় দারুণ সহযোগী। এমনকি মাঠের বাইরেও তিনি অনেক সহযোগিতা করতেন।’ দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক আম্পায়ার মারিয়াস এরাসমাস বলেন, ‘শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে এমন এক চরিত্রের অধিকারী ছিলেন রুডি, যা অতুলনীয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকান আম্পায়ারদের জন্য তিনিই প্রথম দরজা খুলে ধরতে সক্ষম হন। আমাদের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস জন্মিয়েছিলেন যে, এটা সম্ভব। একজন সত্যিকারের কিংবদন্তি এবং তরুণ আম্পায়ার হিসেবে আমি তার কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি।’ আম্পায়ার হিসেবে ১৯৯২-৯৩ সালে অভিষেক ঘটে কোয়ের্তজেনের। প্রথম ম্যাচ পরিচালনা করেচন পোর্ট এলিজাবেথে। এরপর ধীরে ধীরে বিশ্বের সেরা আম্পায়ারে পরিণত হন এক সময়। ১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ভারতের মধ্যকার একটি ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব আসে তার কাছে এবং তিনি সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে সবার প্রশংসা কুড়িয়ে নেন। ২০০৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে থার্ড আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ওই ম্যাচটি একটি বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার কারণে আইসিসির পক্ষ থেকে শাস্তিরও শিকার হন কোয়ের্তজেন। অবসরের পর একটি আত্মজীবনী লিখেন কোয়ের্তজেন।