মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা : রেলক্রসিং কেন অরক্ষিত?
পুরো বিশ্ব স্বীকৃত, রেল নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে রেল যে কতটা বিপদজনক হতে পারে তা আমরা প্রায়শই দেখি, সর্বশেষ দেখলাম ২৯ জুলাই ২০২২, মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া রেলক্রসিংয়ে।
যেখানে মাইক্রোবাস ও ট্রেনের সংঘর্ষে ১১ জন ছাত্র নিহত হয় আর গুরুতর আহত হয় আরও ৭ জন। এই ধরনের ঘটনা যে আমাদের দেশে এবারই প্রথম তা কিন্তু নয়। প্রায়শই লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সাথে মোটরযানের সংঘর্ষের খবর আমরা পাই।
কেন লেভেল ক্রসিংগুলো এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে? এটা কি কেবলই একটা দুর্ঘটনা নাকি আমরা আমাদের অজ্ঞতা, অসচেতনতা, অবহেলা বা ইচ্ছাকৃত ভুলের কারণে রেলক্রসিংগুলো দুর্ঘটনার ফাঁদে পরিণত করছি? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের দেশের রেলক্রসিংয়ের নিরাপত্তা ও পরিচালনার কিছু বিষয় বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
রাস্তা ও রেলপথ যখন একই সমতলে এসে মিলিত হয় তখন তাকে রেলক্রসিং বা লেভেল ক্রসিং বলে যা রাস্তার প্রধান চারটি বিপদজনক স্থানের মধ্যে একটি। অন্য তিনটি বিপদজনক স্থান হলো যথাক্রমে, রাস্তার বাঁক, রাস্তার সংযোগস্থল ও ব্রিজ/কালভার্ট।
রেলক্রসিংয়ে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায় যখন এর সাথে অন্য তিনটির যেকোনো এক বা একাধিক বিপদজনক স্থানের সন্নিবেশ থাকে। যেমন খৈয়াছড়া রেলক্রসিংয়ের সাথেই একটি কালভার্টের অবস্থান রয়েছে যা এই স্থানে ঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এছাড়াও বিভিন্ন কারণে আমাদের রেলক্রসিংগুলো আমরা বুঝে বা না বুঝে ঝুঁকিপূর্ণ করে ফেলি। প্রথমত, রেলক্রসিংয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুই রকম যেমন একটিভ সেফটি ব্যবস্থা ও প্যাসিভ সেফটি ব্যবস্থা।
প্যাসিভ সেফটি হলো, রেলক্রসিংয়ে সতর্কতামূলক সাইন ও রোড মার্কিং প্রদান করা যা একজন মোটরযান চালককে সতর্ক করতে পারে কিন্তু বাধ্য করতে পারে না। অন্যদিকে একটিভ সেফটি হলো প্যাসিভ সেফটির সাথে সাথে ব্যারিয়ার প্রদান, রেলক্রসিংয়ে ফ্লাসিং লাইট ও সতর্কতা বেল বাজানো।