গ্যাস অনুসন্ধানে ব্যর্থতার দায় কার?
দেশে জ্বালানি আমদানির অসহনীয় ব্যয়সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আমদানীকৃত পণ্যের আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে বাধ্য হয়ে জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে বিদ্যুতের পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে ফেলতে হচ্ছে। ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে। প্রায় ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন সত্ত্বেও দৈনিক উৎপাদনকে ১০-১১ হাজার মেগাওয়াটে সীমিত রাখতে হওয়ায় একদিকে লোডশেডিং বেড়েছে, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অব্যবহূত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ হিসেবে প্রদত্ত হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের বোঝা। লোডশেডিংয়ের কারণে শিল্প-কারখানাগুলোকে ‘ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ প্লান্ট’ এবং জেনারেটর চালাতে হচ্ছে।
এতে ডিজেল ব্যবহার বেড়েছে, শহরাঞ্চলের বাড়িঘরে ব্যবহূত জেনারেটরেও ডিজেল ব্যবহার বাড়ছে। সুতরাং যোগ-বিয়োগ করে ডিজেল ব্যবহার কতখানি কমছে, তা বলা কঠিন। লোডশেডিং যে জনদুর্ভোগ ঘটাচ্ছে এবং জনজীবনকে ব্যয়বহুল করছে, তার কথা না হয় বাদই দিলাম! একই সঙ্গে দেশে গ্যাসের ঘাটতিও ক্রমেই অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় গ্যাস রেশনিং বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম গত দু’বছরে প্রায় ১০ গুণ বেড়ে যাওয়ায় দেশের এলএনজি আমদানি ব্যয় অসহনীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশে আমদানীকৃত এলএনজিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতি, শিল্প নীতি এবং গৃহস্থালি জ্বালানি নীতি অর্থনীতিকে বিপর্যয়ে ঠেলে দিয়েছে বলা চলে। সেজন্যই প্রশ্ন উঠছে, বর্তমান এ বিপর্যয়কর গ্যাস সংকটের জন্য দায়ী কে?