জীবনযাত্রার পরিবর্তন, জনস্বাস্থ্য ও ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি
ফ্যাটি লিভার বিশ্বব্যাপী একটি সাধারণ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এমনকি দীর্ঘমেয়াদি লিভার প্রদাহের কারণ হিসেবে ভাইরাসকে অতিক্রম করে ফ্যাটি লিভার প্রাধান্য বিস্তার করছে। বাংলাদেশে প্রতি তিনজনে একজনের ফ্যাটি লিভার আছে। প্রায় ৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ফ্যাটি লিভারে ভুগছে এবং প্রায় ১ কোটি মানুষ সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং ওজন হ্রাসের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার/ন্যাশ প্রতিরোধ করা যায়। ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধিরত ফ্যাটি লিভারের বোঝা কমানোর জন্য ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক, সাংগঠনিক/প্রাতিষ্ঠানিক, বেসরকারি এবং সরকারি পর্যায়ে নীতি হস্তক্ষেপের বিকল্প নেই।
গত ৯ জুন বুধবার সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও পঞ্চম আন্তর্জাতিক ন্যাশ দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ দিবসে বিভিন্ন অঞ্চলের চিকিৎসক, পরামর্শক এবং অন্য বিশেষজ্ঞরা এক হয়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ, রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করছেন। এ দিবসের উদ্দেশ্য হলো মানব শরীরের ফ্যাটি লিভার ও ন্যাশের প্রভাব এবং এর চিকিৎসার জরুরত সম্পর্কে শিক্ষামূলক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা। ফ্যাটি লিভারের বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাব কমানোর জন্য বিশ্বব্যাপী একটি সচেতন নাগরিক সমাজ গড়ে তোলা জরুরি।
বর্তমানে লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ লিভারে চর্বি জমাজনিত প্রদাহ। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে স্টিয়াটো-হেপাটাইটিস। অতিরিক্ত চর্বি জমার কারণে যকৃতে যে প্রদাহ সৃষ্টি হয় তাকেই স্টেটোহেপাটাইটিস বলা হয়। ফ্যাটি লিভারের বিপজ্জনক পরিণতি হচ্ছে ন্যাশ নির্ণয়হীন ও নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় ফ্যাটি লিভার বিপজ্জনকভাবে ন্যাশের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করা ছাড়াও যকৃতে চর্বি জমার বেশকিছু খারাপ দিক রয়েছে। এ রোগটি হূদরোগ, ডায়াবেটিস এবং শরীরে ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। সারা বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও এ রোগের প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।