হেবাং: ঢাকার বুকে ভিন্ন স্বাদের পাহাড়ি খাবার
কলাপাতা থেকে শুরু করে জুমের চাল, সবজি, শুঁটকি, পাহাড়ি মুরগি, হাঁস ও এখানকার রান্নার অন্যান্য সব উপাদান খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি থেকে প্রতি সপ্তাহে ঢাকায় আনা হয়। এজন্য হেবাংয়ের খাবারে পাহাড়ের সজীবতার নির্যাস মিশে থাকে।
চারদিকের কোলাহল, যানজট ঠেলে রেস্তোরাঁটির ভেতরে ঢুকতেই মনে হলো যেন চিরচেনা ব্যস্ত নগরী থেকে দূরে কোথাও চলে এসেছি। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি কারুকার্য ঢাকার মতো ঘিঞ্জি শহরেও এনে দিবে পাহাড়ের অনুভূতি। আর তার সাথে যদি থাকে পাহাড়ি খাবারের সমারোহ তাহলে তো কথাই নেই, মনে হবে কেউ যেন পাহাড়ের বুকে কোন রেস্তোরাঁয় বসে প্রকৃতির সাথে কথা বলছেন আর সেখানকার তাজা সবজির নানা পদের খাবার খাচ্ছেন। ঢাকার মিরপুরের কাজীপাড়ায় আদিবাসী নারীদের পরিচালিত পাহাড়ি খাবারের এ রেস্তোরাঁর নাম 'হেবাং'। চাকমা ভাষার শব্দ 'হেবাং' অর্থ হচ্ছে ভাপে রান্না করা, এ পদ্ধতিতেই আদিবাসীরা তাদের বেশিরভাগ খাবার রান্না করে থাকেন।
রেস্তোরাঁটিতে পাহাড়ি পরিবেশ আনতে বাঁশ দিয়ে আদিবাসীদের ঘরের বাইরে থাকা বারান্দার মতো ছোট ঘর তৈরি করা হয়েছে। রেস্টুরেন্টের ভেতরে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়ে বাঁশের তৈরি খুপরির মতো এই জায়গাটি। বারান্দার দু'পাশে মাটির তৈরি দুটি কলস ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, যাকে চাকমারা 'হুপ্তি' নামে ডাকে। খড় দিয়ে তৈরি চালার ছাউনির ওপর সাজিয়ে রাখা হয়েছে বেতের ঝুড়ি এবং মেঝেতে পাতা হয়েছে মাদুর। রেস্তোরাঁটিতে রঙে আঁকা ছোটবড় দেয়ালচিত্রেও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আদিবাসীদের জীবনচিত্র। সময়স্বল্পতার জন্য যারা পাহাড়ে যেতে পারছেন না বা পাহাড়ি পরিবেশে অবসর বিকেল কাটাতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য 'হেবাং' হতে পারে মোক্ষম ঠিকানা।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- রেস্তোরাঁ
- হোটেল-রেস্তোরাঁ
- পাহাড়ি খাবার