সজ্জায় অতীতের সন্দেশ
আমাদের সাহিত্যের কিংবদন্তি চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বেহুলা, মহুয়া, মলুয়া, চন্দ্রাবতী। ব্যক্তিত্বে তারা দৃঢ়, সজ্জায় পরিপাটি। কবিকল্পনার বাহুল্য বাদ দিলে তাদের সাজসজ্জায় সমকালের প্রভাব আছে। এসব চরিত্রের বর্ণনা থেকে আমাদের এ অঞ্চলের নারীদের প্রাচীন সাজসজ্জা প্রক্রিয়া ও উপকরণের হদিস মেলে।
সাজসজ্জার মূল বিষয় হলো পরিপাটি করে গুছিয়ে নিজেকে ব্যক্তিত্বময় ও আকর্ষণীয় করে তোলা। এ বিষয়ে প্রাচীন বা আধুনিক নারীদের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে না। আধুনিককালে নারীদের সাজসজ্জার যে ধারা, সেটা বহু চর্চিত। বলা হয়, নারীর সাজসজ্জা গভীর পরম্পরার বিষয়। আজ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ শ বছর আগে লেখা বইপত্রে নারীর সাজসজ্জার যেসব বর্ণনা পাওয়া যায়, সেগুলো এখনো ব্যবহার করা হয় বিভিন্নভাবে। প্রাচীন ও বর্তমানকালে সাজসজ্জার মূল পার্থক্য উপাদানের সহজলভ্যতা এবং নতুন উপাদানের সংযুক্তি।
একেত বেহুলার রূপ আরো আভরণ।
রূপেতে করিল আলো শতেক যোজন।।
কবি বিজয়গুপ্ত তাঁর ‘পদ্মপুরাণে’-এ বেহুলার সাজসজ্জা বিষয়ে লাইন দুটি লিখেছিলেন আজ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ শ বছর আগে। নারীদের সাজসজ্জার বেলায় কবিরা কোনোকালেই কার্পণ্য দেখাননি। কিন্তু বর্ণনার ইন্দ্রজাল তৈরির ফাঁকে ফাঁকে কবিরা আমাদের জন্য ছেড়ে গিয়েছিলেন প্রচুর তথ্য। একটু খুঁজে নিলে সেগুলো দিয়ে কয়েক শ বছরের পরম্পরা তৈরি করা যায়। বেহুলার বিয়ের বর্ণনায় বিজয়গুপ্ত সে রকমই এক সেতু রচনা করেছিলেন আমাদের জন্য আজ থেকে বহু বহু বছর আগে।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- সাজসজ্জা
- সাজসজ্জার টিপস
- ঘরের সাজসজ্জা