আসামের মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন তৈরিতে নতুন ‘রাজনৈতিক প্রকল্প’
আসামের মুসলমান মানেই চিরস্থায়ী চ্যালেঞ্জে থাকা এক জনগোষ্ঠী। ‘বিদেশি খেদা’ আন্দোলনের দুঃসহ স্মৃতির পর ‘নাগরিকপঞ্জি’–এর সংকট পেরোতেই এখন তাদের নতুন চ্যালেঞ্জে ফেলা হলো।
সম্প্রতি রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসামের মুসলমান সম্প্রদারের ৫টি উপধারাকে ‘ভূমিপুত্র’–এর স্বীকৃতি দেওয়া হবে। আপাতদৃষ্টিতে এই সিদ্ধান্তকে বেশ নিরীহ এবং অভিনন্দনযোগ্য মনে হলেও স্থানীয় মুসলমানরা এতে সূদূরপ্রসারী এক বিপদের আভাস পাচ্ছেন।
মুসলমান ভোটব্যাংক বিভক্ত করার চেষ্টা চলছেই
ভারতে মুসলমান জনসংখ্যার ৬ দশমিক ২ ভাগ থাকে আসামে। সংখ্যায় এক কোটির সামান্য বেশি। সর্বভারতীয় লোকসংখ্যার বিচারে এই জনসংখ্যা অতি নগণ্য দশমিক ৮৮ ভাগ মাত্র (.৮৮%)। কিন্তু এই মুসলমানদের নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা এবং নজরদারির শেষ নেই। প্রতিনিয়ত তাঁদের খবর হিসেবে তুলে আনা হয়। বিশেষ করে এমন ‘উদ্বেগ’ প্রায়ই ছড়াচ্ছে—রাজ্যটি মুসলমান-প্রধান হয়ে যাচ্ছে! অথচ এই রাজ্যের ৩৩টি জেলার চার ভাগের তিন ভাগেই মুসলমান সংখ্যালঘু। পুরো রাজ্যে তাদের হিস্যা এক–তৃতীয়াংশ মাত্র (৩৪ দশমিক ২২ শতাংশ)। অর্থনৈতিক বিবেচনাতেও তাদের বড় অংশ গণহারে নিম্নবর্গ বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাংলাভাষীরা।
আর্থসামাজিক বঞ্চনা এবং ধর্মীয় বৈরিতার শিকার যেকোনো জনগোষ্ঠী যেকোনো দেশে সচরাচর এক কাতারে থাকতে চায়। আসামে মুসলমানদের মাঝেও এ রকম প্রবণতা আছে। কিন্তু ভোটের অঙ্কে সেটা অসমিয়া প্রভাবশালীদের জন্য বিপত্তিমূলক। ফলে মুসলমান ভোটব্যাংককে বিভক্ত করার একটা পুরোনো প্রচেষ্টা জারি ছিল বহুকাল থেকে। সম্প্রতি তা বেশ পরিণত আদল পেল রাজ্য সরকারের এক ঘোষণায়।